পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছিলাম। কাজেই ভারতীয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বের গোড়র কথা ছিল তার ধ্যানধারণার প্রতি সহানুভূতি, অন্তত সহিষ্ণুতা। এ দুটি জিনিস মেলা সহজ ছিল না।

রাষ্ট্রনৈতিক দলগুলির মধ্যে কেবল শ্রমিকদলই ছিলেন ভারতের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সহানুভূতিশীল। কাজেই শ্রমিকদলীয় বা ভাবাপন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গেই বন্ধুদের সম্ভাবনা ছিল বেশি।

অবশ্য এটা হল মোটামুটি কথা এবং এর বহু হেরফের শ‍ুধু সম্ভব নয়, আমার জীবনে অনেক ঘটেছে। ছাত্রদের মধ্যে, ছাত্রসমাজের বাইরে বহু, রক্ষণশীল লোকেদের সঙ্গে আমার বন্ধুতা সমস্ত বাধাবিপত্তির মধ্য দিয়েও অব্যাহত রয়েছে। আমার মতামতের প্রতি তাদের যথেষ্ট সহিষ্ণু মনোভাব থাকার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছিল। গত কিছুকাল ধরে, বিশেষত গত পাঁচ বৎসৱে বৃটিশ শিক্ষিত সমাজের মধ্যে একটা বিপ্লবের ঝড় বয়ে গেছে। তার ঝাপ‍্টা লেগেছে কেম্ব‌্রিজে, লণ্ডনে অক্সফোর্ডে ও অন্য সর্বত্র। তাই হয়তো আমার ১৯১৯-২০ সালের অভিজ্ঞতা আজকের থেকে অন্যরকম।

যুদ্ধের ঠিক পরবর্তী সময়ের ইংরিজি মেজাজকে যে আমি ভুল বুঝিনি তার প্রমাণ দিতে পারি কয়েকটি দৃষ্টান্তের মধ্য দিয়ে। প্রায়ই শোনা যায় যে সাধারণ ইংরেজের একটা ন্যায় অন্যায়ের বোধ আছে, খেলোয়াড়ী মনোভাব আছে। আমরা যখন কেম্ব‌্রিজে ছিলাম তখন ভাৱতীয় ছাত্রেরা এই মনোভাবের আরো কিছু প্রমাণ পেলে খুশি হত। সে বছর টেনিস চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল একটি ভারতীয় ছাত্র, নাম সুন্দর দাস, ব্ল‌ু-ও পেয়েছিল স্বভাবতই। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম যে ইণ্টার-ভারসিটি খেলাগ‍ুলোতে তাকেই ক্যাপ্টেন করা হবে। কিন্তু সেটা এড়াবার জন্য একজন প‍ুরনো ব্ল‍‌ুকে এনে একবছর

৯(৪৪)
১২৯