পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তাকেই চালিয়ে যাবার ভার দেওয়া হল। কাগজপত্রে এতে কিছু দোষ দেবার নেই। টীমের ক্যাপ্টেন হবার জন্য পুরনো ব্ল‌ুর দাবিটা ন্যায্য, কিন্তু পর্দার আড়ালে কী ঘটে গেল সেটা জামরা যথেষ্ট জানতাম এবং আমাদের দলে নীরব ঘৃণার ও রাগের কিছুমাত্র অভাব ঘটেনি।

আরেকটা উদাহরণ দিয়ে এ প্রসঙ্গ শেষ করি। একদিন নজর পড়ল আণ্ডার-গ্র্যাজুয়েটদের ইউনিভার্সিটি অফিসার্স ট্রেনিং কোর-এ ভরতি হবার জন্য আবেদনপত্র চেয়ে এক নোটিশের উপর। আমাদের মধ্যে কয়েকজন আবেদন করল। উত্তরে শুনলাম যে আমাদের বিষয়ে উপরওয়ালার পরামর্শ নেওয়ার দরকার পড়েছে। কিছুদিন পরে এই মর্মে চিঠি পেলাম যে ইণ্ডিয়া অফিস নাকি আমাদের ভরতির ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন। এই নিয়ে ভারতীয় মজলিশে তুমুল আলোচনা উঠল, ঠিক হল ভারতসচিবের সঙ্গে ব্যাপারটার একটা নিষ্পত্তি করতে হবে এবং দরকার হলে কে. এল. গাউবা ও আমার এ বিষয়ে ভারতসচিবের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালাবার অধিকার থাকবে। তখনকার ভারতসচির ঈ. এস. মণ্টাগু আমাদের পাঠালেন সহকারী ভারতসচিব আর্ল অফ লিটনের কাছে। লিটন আমাদের সমাদর করে বসালেন, মনোযোগ দিয়ে আমাদের কথা শ‍ুনলেন, বললেন যে আপত্তিটা আদৌ ইণ্ডিয়া অফিসের নয়, ওয়ার অফিসের। সেখানে খবর গিয়েছিল যে ভাৱতীয়েরা ও. টি. সিতে ভরতি হলে সেটা ইংরেজ ছাত্রদের সহ্য হবে না। তাছাড়া আরো মুশকিল এইখানে যে ও. টি. সি. থেকে যারা উত্তীর্ণ হয় তারা বৃটিশ সেনাদলে অফিসার পদের অধিকারী। ভারতীয়েরা ও. টি. সিতে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে যদি বৃটিশ সৈন্যদলে অফিসার পদ দাবি করে বসে তবে একটা বিসদৃশ অবস্থার সৃষ্টি হবে এটাও ওয়ার অফিসের অন্যতম চিন্তার বিষয়। লর্ড লিটন

১৩০