পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নির্দেশ অনুসারে তাঁহার এই হস্তক্ষেপ। আমি স্যর উইলিয়মকে জানাইয়াছি যে পূর্ণ বিবেচনার পরই আমি পথ বাছিয়া লইয়াছি।” এই চিঠির খানিকটা ব্যাখ্যা করা দরকার। আমি পদত্যাগ করবামাত্র ইণ্ডিয়া অফিসের কামরায় কামরায় শোরগোল উঠল। তৎকালীন সহকারী ভারতসচিব স্যর উইলিয়ম ডিউক আমার বাবার উড়িষ্যাকমিশনারত্বের কালে তাঁকে চিনতেন। তিনি কালবিলম্ব না করে আমার বড়দা সতীশচন্দ্র বসুকে (তখন লণ্ডনে ব্যারিস্টারি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন) এ বিষয়ে জানালেন এবং বড়দার মধ্যস্থতায় আমাকে পদত্যাগ করার বিরুদ্ধে পরামর্শ দিলেন। কেম্ব‌্রিজের অধ্যাপকেরাও আমাকে অনুরোধ করলেন। তখনকার কেম্ব‌্রিজের সিভিল সার্ভিস বোর্ডের সম্পাদক মিষ্টার রবার্টসএর তরফ থেকেও এক অনুরোধ এল। এত রকমের অনুরোধ উপরোধ পেয়ে কৌতুক বোধ করলাম। শেষোক্ত অনুরোধটাই তার মধ্যে সবচেয়ে মজার। ইণ্ডিয়া অফিসের দ্বারা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রচারিত কতকগুলি ছাপা নির্দেশ নিয়ে একবার মিস্টার রবার্টস্-এর সঙ্গে আমার লড়াই বেধেছিল। এই নির্দেশপত্রের নাম ছিল “ভারতবর্ষে ঘোড়ার যত্ন করার নিয়ম” এবং তাতে এই ধরনের মন্তব্য ছিল যে ভারতবর্ষে সাহসেরা ঘোড়ার খাদ্যই খায়, ভারতবর্ষের বানিয়ারা {ব্যবসায়ীরা) জোচ্চ‌ুরির জন্য বিখ্যাত, ইত্যাদি। আমি এই ফতোয়া পাবামাত্র রাগে জ্বলতে জ্বলতে সহপাঠীদের কাছে গিয়ে হাজির হলাম। সকলে মিলে স্থিৱ করলাম যে এইসব নির্দেশ ভুল এবং অপমানজনক, অতএব সকলে মিলে যুক্ত প্রতিবাদ জানাব। লিখবার সময় যখন এল তখন অবশ্য আর কেউ এগোতে চাইল না, আমি মরিয়া হয়ে নিজেই যা পারি করব স্থির করলাম...

১৪৮