পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কিন্তু অরবিন্দ রাজনীতি এড়িয়ে চলেননি, বরং রাজনীতি নিয়ে বিশেষভাবেই মেতে উঠেছিলেন, যার ফলে ১৯০৮ সালে দেশের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। আরবিন্দের মধ্যে রাজনীতি ও আধ্যাত্মিকতার অপর সমন্বয় ঘটেছিল। ১৯০৯ সালে অরবিন্দ রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করে আধ্যাত্মিক চর্চায় মনোনিবেশ করেন। অরবিন্দের মধ্যে রাজনীতি ও আধ্যাত্মিকতার যে সময় দেখা গিয়েছিল তার ধারা বহন করতে লাগলেন লোকমান্য বালগঙ্গাধর তিলক (১৮৫৬-১৯২০) এবং মহাত্মা গান্ধী (১৮৬৯-১৯৪৮)।

বইয়ের এই সংক্ষিপ্ত ঐতিহাসিক পটভূমিকা থেকে আমার বাবা যখন কলকাতার অ্যালবার্ট স্কুলের ছাত্র ছিলেন সেই সময়কার সামাজিক অবস্থার মোটামুটি একটা ধারণা পাওয়া যাবে। সমাজের শীর্ষস্থান অধিকার করেছিল তখন এক নব্য অভিজাত সম্প্রদায়, বৃটিশ শাসনের আওতায় যাদেৱ জন্ম। আজকের দিনে সোশ্যালিস্টদের ভাষায় এদের বলা চলে ‘বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের মিত্র’। এই নব্য অভিজাত সম্প্রদায় তিনভাগে বিভক্ত ছিল—(১) জমিদার, (২) আইনজীবী এবং সিভিল সার্ভেণ্ট, (৩) ধনী ব্যবসায়ী। বৃটিশ শাসকেরা তাদের শাসন ও শোষণ নীতি অবাধে চালাবার জন্যই এদের সষ্টি করেছিল।

বৃটিশ শাসনে যে জমিদার সম্প্রদায় বিশেষ প্রাধান্য লাভ করেছিল তাদের স্বাধীন বা অর্ধস্বাধীন সামন্তরাজাদের পর্যায়ে ফেলা চলে না, কারণ একমাত্র রাজস্ব আদায় করা ছাড়া এদের কোনো কাজই ছিল না বৃটিশ সরকারও এদের ট্যাক্স-কালেক্টরের বেশি মর্যাদা কখনো দেয়নি। ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের সময়ে যখন ইংরেজদের পতন প্রায় অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল সেই সময়ে এরা রাজভক্তির যে পরাকাষ্ঠা,

১৯