পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

স্কুল জীবন (২)

নিজেদের সম্বন্ধে আমাদের ধারণা অন্যে আমাদের সম্বন্ধে কী ভাবে, তার উপর কতখানি নির্ভর করে, ভাবলে আশ্চর্য লাগে। ১৯০৯ সালের জানুয়ারি মাসে আমি যখন কটকের র‌্যাভেন‍্শ কলেজিয়েট স্কুলে ভরতি হলাম আমার মনের একটা বড়ো রকমের পরিবর্তন ঘটল। য়ুরোপীয় ও অ্যাংলো-ইণ্ডিয়ান ছাত্রদের কাছে আমার বংশমর্যাদার কোনো মূল্য ছিল না, কিন্তু ভারতীয় ছেলেদের ক্ষেত্রে ঠিক তার উল্টোটাই দেখা গেল। তাছাড়া অন্য সকলের চাইতে আমার ইংরিজি জ্ঞান বেশি থাকার দরুন সকলেই আমাকে অত্যন্ত সমীহ করে চলত। এমন কি শিক্ষকেরা পর্যন্ত আমার পক্ষপাতিত্ব করতেন, কারণ তাঁরা সকলেই ধরে নিয়েছিলেন আমি ক্লাসে প্রথম হব—আর ভারতীয় স্কুলে লেখাপড়াই হল ভালোমন্দর মাপকাঠি। প্রথম ত্রৈমাসিক পরীক্ষায় আমি সত্যিই প্রথম হলাম। নতুন এই পরিবেশে এসে প্রথম অনুভব করলাম আমি নেহাত নগণ্য নই। এই মনোভাবকে অহঙ্কার না বলে আত্মপ্রত্যয় বললেই ঠিক বলা হবে। এতদিন পর্যন্ত আমার মধ্যে এই আত্মপ্রত্যয়েরই অভাব ছিল—যে আত্মপ্রত্যয়ের জোরে মানুষ জীবনে সফলতা লাভ করে।

এবার আমাকে আর ইনফ্যাণ্ট ক্লাসে ভরতি হতে হল না, আমি ভরতি

৩(৪৪)
৩৩