পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কখনো যেন র‍ূঢ় না হয়। কারণ, তাঁদের স্বাভাবিক ইচ্ছায় যতোই বাধা দেওয়া যায় ততোই তারা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে, এবং শেষটায় একেবারে বেয়াড়া হয়ে যায়। বাপমায়েরা বরং যদি এ ধরনের ছেলেদের অস্বাভাবিকতাকে খানিকটা মেনে নিয়ে তাদের বুঝতে চেষ্টা করেন, তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন, তবে হয়তো তাদের খামখেয়াল, অস্বাভাবিকতা সব আস্তে আস্তে সেরে যাবে। ঈশ্বর, আত্মা এবং ধর্ম—এসবে বিশ্বাস করা যুক্তিসঙ্গত কি না সে প্রশ্নের জবাব আমার পক্ষে দেওয়া সহজ নয়, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি অল্প বয়স থেকে ধর্মচর্চা ও যোগসাধনায় মন দিয়ে আমি একটা বড় জিনিস লাভ করেছিলাম। জীবনধারণে দায়িত্ব যে কতখানি তা বেশ ভালো করেই বুঝতে শিখেছিলাম। কলেজ-জীবনে প্রবেশ করবার সময়ে জীবন সম্বন্ধে আমার মনে মোটামুটি একটা ধাৰণা জন্মে গিয়েছিল, বুঝেছিলাম জীবনের বিশেষ একটা উদ্দেশ্য আছে এবং এই উদ্দেশ্য সফল করার জন্য শরীর ও মনের নিয়মিত অনুশীলনের প্রয়োজন। স্কুল-জীবনে যদি শরীর মনকে এভাবে তৈরি না করতাম তবে আমার স্বাস্থ্য যে রকম খারাপ ছিল তাতে পরবর্তী জীবনের ঝড়ঝাপটা সামলে ওঠা আমার পক্ষে সম্ভব হত কি না সন্দেহ।

আগেই বলেছি প্রথমজীবনে আমি পারিপার্শ্বিকের সঙ্গে নিজেকে বেশ খাপ খাইয়ে নিয়েছিলাম প্রচলিত—সমাজব্যবস্থা এবং নৈতিকবোধের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ ঘটেনি। প্রত্যেকের জীবনেই এরকম হয়। তারপরই আসে সংশয়—ডেকার্টের বুদ্ধিমুলক সংশয় শ‍ুধু নয়, সমগ্র জীবন সম্বন্ধেই এই সংশয়। একে বলা চলে জীবনজিজ্ঞাসা। কেন এই পথিবীতে এসেছি? জীবনের উদ্দেশ্যই বা কী? মানুষ মাত্রেরই মনে তখন এইসব প্রশ্ন জাগে। যদি এই প্রশ্নের সঠিক

৫(৪৪)
৬৫