পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তেমন জনপ্রিয় ছিলাম না, কারণ তখনকার দিনে বাঙলাদেশের ছাত্রদের সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের প্রতি অদ্ভ‌ুত একটা আকর্ষণ ছিল। এমন কি যেসব ছেলেরা এই ধরনের সন্ত্রাসবাদী দলের ছায়া মাড়াতেও ভয় পেত তারাও মনে মনে সন্ত্রাসবাদীদের সম্বন্ধে খুব উঁচু ধারণা পোষণ করত। অনেক সময়ে নতুন সভ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসবাদী দলের সঙ্গে আমাদের দলের সংঘর্ষ লাগত। একবার বেশ একটা মজার ব্যাপার হয়েছিল। আমাদের কার্যকলাপ দেখে সি. আই. ডি.র কর্মকর্তাদের সন্দেহ হল ধর্মচর্চার ছদ্মবেশে আমরা হয়তো গোপনে অন্য কিছু করছি। এই সন্দেহে আমাদের দলের একটি সভ্যকে গ্রেপ্তার করার আয়োজন হল। সি. আই. ডি.র ধারণা ছিল এই সভ্যটিই দলের নেতা। এই সময়ে একটি সন্ত্রাসবাদী দলের দুজন সভ্যের চিঠিপত্র পুলিশের হাতে পড়ে—এই চিঠিগুলি থেকে পুলিশ জানতে পারে যে আমাদের দলের সেই সভ্যটিকে সন্ত্রাসবাদীরা পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলবার প্রস্তাব করছিল কারণ সে নাকি সন্ত্রাসবাদী দলের অনেক সভ্যকে আমাদের দলভুক্ত করে অহিংসা শিক্ষা দিচ্ছিল। এই চিঠি পড়ে আমাদের দলের প্রকৃত পরিচয় পেয়ে পুলিশ সেই সভ্যটিকে গ্রেপ্তারের হাত থেকে অব্যাহতি দেয়; আমাদেরও পুলিশের কোপদৃষ্টিতে পড়তে হয়নি। ১৯৯৩ সালে শীতের সময়ে আমরা কলকাতা থেকে ৫০ মাইল দূরে হ‍ুগলি নদীর ধারে অবস্থিত শান্তিপুর নামে একটি জায়গায় গিয়ে কিছুদিন গেরুয়াধারী সন্ন্যাসী হয়ে বাস করছিলাম। হঠাৎ একদিন পুলিশ এসে আমাদের আস্তানা খানাতল্লাসী করে সকলের নামধাম লিখে নিয়ে চলে গেল। ব্যাপারটা এর বেশি আর গড়ায়নি।

তখনো আমি বি. এ. পাশ করিনি, সে সময়ে বাঙলাদেশের নেতাদের,

৭৫