পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একজাতের ছিলাম না। প্রশ্ন শুনে আমি তো অবাক, কারণ এরা সকলেই ছিল শঙ্করাচার্যের ভক্ত। আমি চট্ করে শঙ্করাচার্যের একটি শ্লোক আউড়ে তাদের বুঝিয়ে দিলাম শঙ্করাচার্য নিজে সবরকম ভেদাভেদের একান্ত বিপক্ষে ছিলেন। হাতে হাতে যুক্তি পেয়ে আমার কথায় তারা প্রতিবাদ করতে পারল না। কিন্তু পরের দিন যখন আমরা কুয়োর ধারে স্নান করতে গিয়েছি, কয়েকটি লোক এসে বলে গেল আমৱা কুয়ো থেকে জল তুলতে পারবে না, কারণ আমরা ব্রাহ্মণ নই। সৌভাগ্যক্রমে আমাদের ব্রাহ্মণ বন্ধুটির গলায় সে সময়ে পৈতে ছিল। সে তো সুযোগ বুঝে চাদরের তলা থেকে সেই পৈতে বের করে তাদের দেখিয়ে জল তুলে এক এক করে আমাদের দিতে শুরু করে দিল। বেচারাদের তখন যা অবস্থা!

মথুরায় আমরা এক পাণ্ডার বাড়িতে উঠেছিলাম। একদিন সেখান থেকে নদীর ওপারে এক সাধুর সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। সাধুটি মাটির তলায় একটি ঘরে থাকতেন। তিনি আমাদের সংসার ত্যাগ করার মতলর ছেড়ে বাড়ি ফিরে যেতে উপদেশ দিলেন। একজন সন্ন্যাসী মে এই পরামর্শ কী করে দিতে পারে, ভেবে অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছিলাম আমি, এখনো মনে পড়ে। মথুরায় থাকতে একজন আর্যসমাজীর সঙ্গে আমাদের খুব ভাব হয়েছিল। ভদ্রলোক ছিলেন আমাদের নিকট-প্রতিবেশী। আর্যসমাজের প্রতিষ্ঠাতা দয়ানন্দ সরস্বতী। আর্যসমাজীদের উদ্দেশ্য খাঁটি বৈদিক অনুশাসন অনুসারে হিন্দুধর্ম এবং সমাজব্যবস্থার সংস্কার করা। তাঁরা মুর্তিপুজা বা জাতিভেদ বিশ্বাস করেন না। এদিক থেকে ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গে এদের মিল আছে। আর্যসমাজের প্রভাব সবচেয়ে বেশি

৮৭