পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/১০৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এলিফেণ্ট । বৎসরের প্রাচীন বলিয়া নির্ণয় করিয়াছেন, এই সিদ্ধান্ত যে অন্যায় নহে তাহা যিনি এস্থান দর্শন করিয়াছেন তিনি সহজেই তাহা উপলব্ধি করিতে পারিবেন। দুঃখের বিষয় এ সকল মূৰ্ত্তির মধ্যে অধিকাংশই বিকলাঙ্গ। এ সমুদয় খোদিত মূৰ্ত্তি দেখিতে দেখিতে আপনাকে চারি সহস্ৰ বৎসরের পুরাতন বলিয়া বোধ হয়, বৰ্ত্তমান ও অতীতের মধ্যে যে সুবৃহৎ ব্যবধান আছে, তাহা বিস্মৃত হইয়া কল্পনার আজ্ঞাকারীরূপে নানা দৃশ্যের মধ্যে আপনার অস্তিত্বটুকু হারাইয়া যায়, কখনও ভীষণমূৰ্ত্তি ভৈরবের ভীমদৃষ্টি, কখনও পিশাচ দ্বারপালগণের বিকট মুখভঙ্গিমা কখনও বা ঐরাবত পৃষ্ঠে ইন্দ্রের প্রশান্ত মুখশ্ৰী-পদ্মযোনী ব্ৰহ্মার সৌম্য মধুর হসিত বদনের গাম্ভীৰ্য্য, কন্যারূপ গৌরীর বিবাহ সভায় যাইবার সলজ্জ অথচ ঈষৎ হাসিভরা মুখখানির ঢল ঢল যৌবন-সুষমা—গঙ্গা, সরস্বতী যমুনার তরঙ্গময়ী হরজটা বিহারিণীমূৰ্ত্তি, সকলি শিল্প নৈপুণ্যের পরিচায়ক । যাহাঁদের ললিতকলার নিপুণতা প্রভাবে ইহারা প্রস্তরের মধ্যেও প্ৰাণ পাইয়াছিল-সে সব শিল্পীরা এখন কোথায় ? জগতের কয়জন তাহাদের স্মরণ করিয়াছে ? একদিন শ্মশানভস্মের উপর আত্মীয়স্বজনের যে দুই ফোটা শোকা শ্ৰী পতিত হইয়াছিল তাহার সহিতই কি সব শেষ হয় নাই ? তাহারা গিয়াছেন বটে, তাহদের দেহাবশেষের বিন্দুমাত্ৰও চিহ্ন জগতের বুকে নাই বটে, কিন্তু একথা ঠিক যে যতদিন পৰ্য্যন্ত এলিফেণ্টা গুহার একটা ভগ্ন মূৰ্ত্তিরও চিহ্ন বিদ্যমান থাকিবে, ততদিন পৰ্য্যন্ত ইহাদের স্মৃতি জাতিবর্ণ নির্বিশেষে চিরকাল সকলের হৃদয়ে জাগুরক থাকিবে। প্রতিপদবিক্ষেপে আমরা সুদূর অতীতের গৌরবগরিমা অনুভব করিতেছি। সমুদ্রতরঙ্গ বিক্ষুব্ধ দ্বীপমধ্যস্থ পর্বতগাত্ৰে কত অধ্যবসায়, কত দৃঢ়তা, কত সূক্ষদৃষ্টি, কত দূরগামী কল্পনাও মনোবৃত্তির উচ্চতা দ্বারা ইহারা নিৰ্ম্মিত হইয়াছিলতাহা ভাবিবার বিষয় বটে। এই গুহা রাত্রিকালে আলোকিত श्शेgव्न दऊंझे সুন্দর দেখায়। ভারতের বর্তমান সম্রাট সপ্তম এডওয়ার্ড যুবরাজ অবস্থায় যখন বােম্বাই সহরে আগমন করেন তখন তাহার প্রত্যাৰ্থও সম্মানার্থ এলিফেণ্টায় যে ভোজ দেওয়া হইয়াছিল তাহাতে গুহাভ্যন্তর দ্বীপালোকে স্বরঞ্জিত করা হইয়াছিল। বােম্বাই সহর হইতে এলিফেণ্টা ৬ মাইল দূৱ। "