পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিয়াছিলেন, শৈব সম্প্রদায়ভুক্ত লোকেরা ইহাকে হরদ্বার নামে অভিহিত করে। হরিদ্ধারে কলিকাতার অন্যতম প্রসিদ্ধ ধনী সূৰ্য্যামল ঝুনঝুনওয়ালার। ধৰ্ম্মশালা আছে, সাধারণতঃ অপরিচিত পান্থগণ সেখানেই অবস্থিতি করেন। স্টেসন হইতে উহা প্ৰায় ১॥০ মাইল দূরে হইবে। সূৰ্য্যামল বাবু ঋষিকেশ । হইতে তিন মাইল দূরবর্তী লছমন ঝোলার লৌহসেতু নিৰ্ম্মাণ করিয়া দিয়া । তীর্থযাত্ৰিগণের অশেষ উপকার করিয়াছেন ; ধনের যিনি সদ্ব্যবহার করেন - তিনিই ধন্য। যাত্রিগণ সাধারণত: এস্থানে স্নান ও তর্পণ করিয়া থাকেন, , উহাই এখানকার প্রধান কাৰ্য্য । ,、 طا- . . আমরা পরদিন প্রত্যুষে গঙ্গাদ্বার ঘাটে স্নান করিতে গমন করিলাম। ব্ৰহ্মকুণ্ড বা তখন তরুণ রবির কনক-কিরণ-মণ্ডিত গিরিশ্ৰেণী যে অনন্ত । গঙ্গাবার ঘাট। সৌন্দৰ্য্যে আপনাকে সুশোভিত করিয়াছিল, তাহা লেখনী- | মুখে প্ৰকাশ হইবার নহে। হরিদ্ধারে এই ঘাটেই গঙ্গা স্নান করা প্রশস্ত। হিন্দুস্থানী যাত্ৰিগণ ইহাকে ‘হরি-কি-চরণ ঘাট” নামে অভিহিত করিয়া থাকেন। এই ঘাটের উপর বিষ্ণুর চরণ-চিহ্ন অঙ্কিত আছে। এস্থানেই গঙ্গা পৰ্বত । ভেদ করিয়া প্ৰথমে পতিত হইয়াছেন—ইহার প্রকৃত নাম মায়াপুরী। . কুম্ভমেলার সময় যাত্ৰিগণ এই ঘাটেই স্নান করিয়া থাকেন—সে সময়ে ; এস্থানে নানা দেশদেশান্তর হইতে শৈব, বৈষ্ণব, দণ্ডী, পরমহংস, অবধূত । প্রভৃতি নানা শ্রেণীর সাধু এবং গৃহস্থ্যগণ আগমন করেন, বিগত কুম্ভমেলায় । হরিদ্ধারে প্রায় পাঁচ ছয় লক্ষ সাধুসন্ন্যাসী সমবেত হইয়াছিলেন। পূর্বে | মেলার সময় স্নান লইয়া অনেক দাঙ্গা হাঙ্গামী হইয়া গিয়াছে। ১৭৬ ৷ খ্ৰীষ্টাব্দে এস্থানে যে কুম্ভমেলা হইয়াছিল, তাহাতে গােস্বামী ও বৈরাগী । এই উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়ানক দাঙ্গা হাঙ্গামা হয় তাহাতে১৮০০ শত লোক নিহত হইয়াছিল। আর একবার গোস্বামীদের সহিত । শিখদের কলহ হয় তাহাতে প্ৰায় পাঁচশত গােস্বামী মৃত্যুর কবলে পতিত্ব হইয়াছিলেন। ধৰ্ম্মান্ধতায় সময়ে সময়ে যে নানাপ্রকার বিপ্লব সংঘটিত ।