পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এখানেই একদিন আৰ্য্যগণের বেদ-ধ্বনি গগন-মণ্ডল প্ৰতিধ্বনিত করিয়া- ৷ ছিল –এই পঞ্চনদই হিন্দুর অতীত-গৌরব-কাহিনী-ভূষিত পুণ্যতম প্রদেশ। সরস্বতীর পবিত্ৰ-সলিলে অবগাহন করিবার জন্য প্ৰতিবৎসর এস্থানে हैडिश्न। বহু যাত্রী-সমাগম হয়। পূর্বে এই নগর সর্দার গুরুবক্সের ) পত্নী দয়াকুরের অধিকারে ছিল, পরে মহারাজা রণজিৎ সিংহ উহা অধিকার করিয়া লন। কিন্তু অক্টার্লানি সাহেব কৃপা করিয়া ইহা গুরুবক্সের পত্নী দয়াকুরকে প্ৰত্যপণ করেন। ১৮২৩ খ্ৰীষ্টাব্দে দয়াকুরের মৃত্যু হওয়ায় অম্বালা নগরী ইংরেজের অধিকারে আসিয়াছে। । এখানকার সৈনিকাবাসের অনতিদূরে একখানা কালীবাড়ী আছে। শুনা যায় যে ইহা রামকৃষ্ণ ব্ৰহ্মচারী নামক জনৈক বাঙ্গালী মহাপুরুষের কীৰ্ত্তি। ইনি বিষয়-সুখে জলাঞ্জলি দিয়া বৈরাগ্য-ব্ৰত গ্ৰহণ করতঃ উত্তর-পশ্চিমে আসিয়া এলাহাবাদ, আগ্রা, দিল্লী, অম্বালা, রাউলপিণ্ডী, মুলতান, লাহোর, পেশোয়ার প্রভৃতি স্থানে একএকটী কালী-মন্দির নিৰ্ম্মাণ করিয়া গিয়াছেন, এসকল কালী-মন্দিরের জন্য পৰ্য্যটকদিগের বিদেশভ্রমণের কষ্ট যে কত পরিমাণে লাঘব হইয়াছে, তাহা ভ্ৰমণকারী ব্যক্তি মাত্ৰেই বিশেষরূপে জ্ঞাত আছেন । অম্বালার কালীবাড়ীর বন্দোবস্ত অত্যন্ত উৎকৃষ্ট । আমরা এখানকার কালীবাড়ীতেই আশ্রয় গ্ৰহণ করিয়াছিলাম। তৎকালীন কালীর সেবায়ত পাতিয়ালার ভূতপূর্ব রাজপণ্ডিত চাণক নিবাসী পণ্ডিত শ্ৰীযুক্ত কালীপ্রসন্ন শিরোমণি মহাশয়ের সদ্ব্যবহারে । নিতান্ত গ্ৰীত হইয়াছিলাম। এই মহাত্মা সংসারাশ্রম ত্যাগ করিয়া জগন্মাতার শ্ৰীচরণ সেবাতেই অবশিষ্ট জীবন কাটাইয়া দিবেন বলিয়া ঠিক করিয়াছেন। ইনি জ্ঞানী ও শাস্ত্ৰজ্ঞ ; প্রবাসী-বাঙ্গালী ভ্ৰমণকারীর পক্ষে ইহার সহায়তা বিশেষ প্রীতিপ্ৰদ। মাসিক চাঁদা এবং যাতায়াতকারী বাঙ্গালী ভদ্র মহোদয়গণের প্রদত্ত দর্শনী হইতেই কালীবাড়ীর ব্যয়াদি নির্বাহিত হইয়া থাকে। এতদ্ব্যতীত দুর্গোৎসব, জগদ্ধাত্রী ও সরস্বতী পূজা প্রভৃতি পর্বগুলি এখানে বিশেষ জঁাকজমকের সহিত সম্পাদিত হয়। আমরা জগদ্ধাত্রী পূজার সময় এস্থানে উপস্থিত ছিলাম, জগন্মাতার পূজা দিয়া আপনাকে কৃতাৰ্থ বােধ করিলাম। স্থানীয় সমুদয় বাঙ্গালী ভদ্র-লোকদের নিমন্ত্রণ করা হইয়াছিল, q9.