পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জলন্ধর হইতে আমরা জ্বালামুখীর দিকে গমন করিলাম। জ্বালামুখী হিন্দুদের মহাতীর্থ। এরূপ দুরারোহ ও দুর্গম পথ ভারতবর্ষের অতি অল্প তীর্থ স্থলে যাইতেই অতিক্রম করিতে হয়, ইহা সকল তীর্থযাত্রীর পক্ষে সুগম নহে। একান্ন মহাপীঠের অন্যতম পীঠ বলিয়াই ইহার বিশেষ খ্যাতি। এ স্থানে সতীর রসনা বিচ্ছিন্ন হইয়া পতিত হইয়াছিল। ক্রমান্বয়ে তিনটী উচ্চ পর্বতের চড়াই ও উতরাই শেষ করিয়া। তবে জ্বালাজীতে পহুছিতে পারা যায়। এক্কা, ঘোড়া এবং ডুলিতে জ্বালামুখী যাইতে হয়। আমরা জলন্ধর হইতে এক্কাতে হুসিয়ারপুর। পৰ্য্যন্ত আসিয়া সেখান হইতে পুনরায় একযোগেই গমন করিয়াছিলাম। জলন্ধর হইতে হুসিয়ারপুর জেলা ২৪, ২৫ মাইল দূরে অবস্থিত। হুসিয়ারপুর। পৰ্যন্ত রাস্তা বেশ সমতল ও প্রশস্ত। ইহার পর হইতেই পার্বত্য পথ। কেহ কেহ গরুর গাড়ী, ডুলি, কিংবা টাটুতে চড়িয়াও জ্বালাজী গিয়া থাকেন। । হুসিয়ারপুরের ৩/৪ মাইল পর হইতেই পার্বত্য পথ আরম্ভ হইল— রাস্তাগুলি এত সংকীর্ণ ও বন্ধুর যে পদে পদে বিপদাশঙ্কা করিতে হয়, যদি একবার কোনওরূপে পদস্থলিত হয়, তবে সহস্ৰ সহস্ৰ ফিট নীচে কোন সুদূর গর্ভে যে পতিত হইতে হইবে সে কল্পনা করিতেও শরীর শিহরিয়া উঠে ! হুসিয়ারপুর হইতে জ্বালামুখী প্ৰায় ৩০|৩১ ক্রোশ দূর হইবে ; জ্বালামুখী জলন্ধরের উত্তর পূর্ব দিকে অবস্থিত। ধৰ্ম্মার্থ যাত্ৰিগণ বিশেষ সতর্কতার সহিত আড্ডায় আড্ডায় বিশ্রাম করিয়া প্ৰায় তিন দিবসে তথায় উপনীত হ’ন। দুই দিবস নানাপ্রকার বিপদাপদের মধ্য দিয়া--বনজঙ্গল বেষ্টিত শিলাকীর্ণ পাৰ্বত্যভূমির তরঙ্গায়িত ভীষণ সৌন্দৰ্য অতিক্রম করতঃ—যখন চিন্তাপূর্ণ পাহাড়ে আসিয়া পহুছিলাম, তখন মনে হইল যে অদৃষ্ট জ্বালাজী দর্শন আছে; কারণ এখান হইতে