পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আছে। নগর-প্রাচীর স্থানে স্থানে এখন ভাঙিয়া গিয়াছে, গভৰ্মেণ্টও জীৰ্ণ । সংস্কারে তাদৃশ মনোযোগী নহেন। তঁহাদের মতে প্রাচীর-বেষ্টিত নগর নাকি স্বাস্থ্যের পক্ষে মঙ্গলজনক নহে। এই প্রাচীর প্রায় ১৫ ফুট উচ্চ। ৫ আমরা নগরের চতুর্দিক ঘুরিয়া দেখিলাম। বাজারের দুইটী গলি ভিন্ন । অপর সকল পথই কলিকাতার বড়বাজারস্থ গলির ন্যায় অপ্ৰশস্ত, গাড়ীতে । যাতায়াত করা দুরূহ। এখানে জিনিষপত্ৰ তত সুলভ নহে। কলিকাতা, । দিল্লী ও বোম্বে হইতে জিনিষ-পত্ৰাদির আমদানী হইয়া থাকে। কাবুলী মেওয়া এখানে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় আর দরও খুব সস্তা। লাহোরের পশ্চিম দিক দিয়া রাবী নদী প্ৰবাহিতা। আনার-কলি নামক স্থানটিই | লাহোরের সর্বশ্রেষ্ঠ অংশ। এই স্থানেই দেশীয় ও ইউরোপীয় লোকদিগের - বড় বড় দোকান ও কারবার দর্শকগণের নয়নমন আকর্ষণ করিতেছে । এরূপ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থান লাহোরের আর কোথাও নাই । উচ্চ শ্রেণীর আফিস আদালতাদি সমুদয়ই এস্থানে অবস্থিত। আনার-কলির ইতিহাসটি বড়ই শোকোদ্দীপক। আনার-কলি নাস্ত্রী একটী । ইরাণদেশীয় রূপসী ও ষোড়শী বঁদীর সহিত সম্রাট আকবর বাদশাহের । পুত্র সেলিমের প্রণয় হয়। সেলিম গোপনে এই সুন্দরী যুবতীর পাণিগ্রহণ | করেন। এই ঘটনা আকবর শুনিতে পাইয়া নিতান্ত ক্রুদ্ধ হন এবং জীবিতা- ? বস্থায়ই তাহাকে এই স্থানে কবর দিয়া বধ করেন। তদবধি এ স্থানের - নাম আনার-কলি হইয়াছে। প্ৰণয়ের জন্য এইরূপ অপূর্ব আত্মোৎসৰ্গ । জগতে অতি বিরল দৃষ্ট হয়। জাইগীর দিল্লী-সিংহাসনে আরোহণ করিয়া । আনারের সমাধিস্থানের উপর একটা সুন্দর সমাধিমন্দির নিৰ্ম্মাণ করিয়া দিয়াছেন। উহা এখনও বৰ্ত্তমান আছে এবং উহাতে গভমেণ্টের রেকর্ড । অফিস লহিয়াছে। বহুদিন পৰ্য্যন্ত এই সমাধিমন্দিরই ইংরেজের গির্জার কাজ করিয়াছে। এই অট্টালিকাটির মধ্যপ্ৰকোষ্ঠের উপরে যাহাতে স্মৃতিলিপি । খোদিত আছে, তাহা একখানি তুষারধবল মৰ্ম্মর প্রস্তর। ইহার অক্ষরগুলি আনার-কলি। অতিশয় সুন্দর ও স্পষ্ট। এইরূপ মনোরম খোদিত লিপি ভি রতবর্ষের আর কোনও সমাধিমন্দিরে দেখিয়াছি বলিয়া মনে হয় না। প্রস্তরখানির, পাশে খােদার ৯৯টা নাম এবং তাহার নীচে মন্জুন সলিম আকবর’ অর্থাৎ -