পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৪২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৃন্দাবন । আর নাই। ঔরঙ্গজেবের কঠোর আদেশে যদিও এই অভ্ৰস্পৰ্শী পাষাণ সৌধের উদ্ধভাগ একেবারে ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, তথাপি এখনও যাহা আছে— তাহার অপূর্ব কলানৈপুণ্য দর্শন করিলেও বিস্ময়-বিমুগ্ধ নেত্ৰে চাহিয়া থাকিতে হয়। প্ৰতি প্ৰস্তর গাত্রে কি নিপুণতা-কি গঠন শ্রেষ্ঠতাতাহা না দেখিলে কেবল বলিয়া বুঝান যাইতে পারে না। এখনও এই ভগ্ন প্রস্তর স্তুপরাশি দর্শন করিবার নিমিস্ত শত শত বৈদেশিক প্রত্নতত্ত্ব বিদগণ আগমন করিয়া থাকেন এবং শতমুখে ইহার অপূর্ব নিৰ্ম্মাণ কৌশলের প্রশংসা করিয়া থাকেন। প্রকৃতপক্ষেই গোবিন্দজীর এই AÁ As I 'is the most impressive religious edifice that l lindu art has ever produced." এই দেবমন্দির সম্বত ১৬৪৭ অর্থাৎ ১৫৯০ খ্ৰীষ্টাব্দে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। ভগ্ন মন্দিরের পশ্চাদভাগেই বৰ্ত্তমান গোবিন্দদেবের মন্দির প্রতিষ্ঠিত । আমরা অতি প্ৰত্যুষে গোবিন্দজী ও রাধারাণীকে দর্শন করিতে গমন করিয়াছিলাম, তখন কেবল মাত্ৰ প্ৰভাত তপনের কনক কিরণ রশ্মি মন্দির চূড়ায় শোভা পাইতেছিল, আর বিহঙ্গম কুলের সুমধুর স্বর-লহরীতে চারিদিক মুখরিত, সে মধুর ললিত তানে মধুর বৃন্দাবন জাগিয়া উঠিয়াছে। চারিদিকে লোকারণ্য, যাত্ৰিগণ কেহ কেহ “জয় গোবিন্দজীকী জয়’ রবে উচ্চনাদ করিতেছিল, কেহবা মধুর সংকীৰ্ত্তণে প্ৰেমময়ের প্ৰেম-কাহিনী গাহিতে ছিল, একজন বাঙ্গালী বৈষ্ণব সুমধুর কণ্ঠে অপেক্ষাকৃত একটু নিৰ্জনে বসিয়া গাহিতেছিল :- “আখিলের নাথ, তুমি হে কালিয়া যোগীর আরাধ্য ধন, গোপ গোয়ালিনী, হাম অতি দীন না জানি ভজন পূজন ॥” আমার নিকট বৈষ্ণব কবির এই মধুর গীতখানি যেন মূৰ্ত্তিমতীরূপে আসিয়া হৃদয়ে ক্রীড়া করিতেছিল। আহা! কি সুন্দর সুমধুর সঙ্গীত উচ্ছাস— ভক্তির ও প্রেমের কি অপূর্ব বিকাশ! বুঝি এমন দীনভাব হৃদয়ে পোষণ না করিলে ‘অখিলের নাথের” কৃপা পাওয়া যায় না। আমরা নব প্ৰতিষ্ঠিত দেবালয়ের দ্বার উন্মুক্ত হইলে জনতার মধ্য হইতে অগ্রসর হইয়া সেই Ridd