পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৪৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আওরঙ্গজেবের রাজত্ব সময়ে নন্দ-ভবন ভগ্ন হইয়া এই মসজিদ নিৰ্ম্মিত ইয়াছিল। পাঁচ সারিতে ৮০টা থামের উপর এই অট্টালিকা নিৰ্ম্মিত ইয়াছিল বলিয়া ইহা অস্থাপিও আশীখাম্বা’ নামে পরিচিত। এই স্তম্ভ-নিচয়ের কারুকাৰ্য্যাদি পৰ্য্যালোচনা করিলে সহজেই বুঝিতে পারা যায়, হিন্দু মন্দিরকে ভাঙ্গিয়া-চুরিয়াই এই মসজিদ নিৰ্ম্মিত হইছিল। হায়! : হিন্দুর কত মহিমাময়ী কীৰ্ত্তিই যে এইরূপ ধ্বংসের পথে গমন করিয়াছে, তাহার ইতিহাস সংকলন করাও এখন কঠিন। মহাবনে আরও দুই একটা দেবমন্দির দর্শন করিয়াছিলাম, দুঃখের বিষয় যে তাহার কোনটি উল্লেখ যোগ্য নহে, সেজন্যই উহাদের বর্ণনায় ক্ষান্ত রহিলাম। মহাবিন হইতে চারিক্রোশ দূরে দাউজী অবস্থিত। দুইধারে বহু সুন্দর সুন্দর প্রান্তর, তাহার মধ্য দিয়া এক্কা ছুটিয়া চলিল । মধ্যাহ্ন। রবির খর-কিরণ চতুর্দিকে প্ৰদীপ্ত শোভায় শোভান্বিত। নাগরিক শোভা-সম্পদের মধ্যে এতদিন ঘুরিয়া ঘুরিয়া আজ এই পল্লী-পথের শ্যাম সৌন্দৰ্য্যের সবুজ-চিত্র নয়নের উপরে সজীবতার নবীন শোভা ধরিয়া দিতে ছিল। দূরে—-আরো দূরে প্রান্ত-নিলীন গ্রাম-সমূহের সীমারেখা । মাঠে-মাঠে শস্য-সম্পদ, বেশ একটু সুন্দর বোধ হইল। বাঙ্গালায় শ্যামল তরুছায়া-সমাচ্ছন্ন হাস্যময়ী প্রকৃতি সুন্দরীর যৌবন-সৌন্দর্য্যের স্নেহকোমলতার পরিবর্তে এখানকার প্রৌঢ়া শোভা কতকটা নূতন, দেখিবার ও উপভোগের বিষয় বটে। কতক্ষণ পরে আমরা বলরাম মন্দিরের অর্থাৎ দাউজীর নিকটবৰ্ত্তী হইলাম। সঙ্গে সঙ্গেই মহাবনের মত এখানেও বহু ছোট ছোট বালকগণ পশ্চাতে লাগিল। ‘দে বাবুজী একটা পয়সা দে” এমনি কোমল সুরে ইহার এই ভিক্ষা প্রার্থনা করে যে - তাহাতে হৃদয় আপনা হইতেই দ্রবীভূত হইয়া পড়ে। কঠোর ব্যবহার করিতে প্ৰাণে আঘাত লাগে। * আমরা দেবমন্দিরের নিকট পহুছিবামাত্ৰই পাণ্ডাঠকুরেরা আসিয়া বেড়িয়া ধরিল, কিন্তু তাহাদিগকে বড় একটা আমল না দিয়া নিজেরাই দেব-দর্শনে চলিলাম। তাহদের স্বার্থান্ধ-অভিশাপ-লোহিত চক্ষু ও নানাপ্রকার অসম্বন্ধ প্ৰলাপ বড় একটা গ্রাহা করিলাম না, কারণ আমরা দলে নিতান্ত কম गाउँछौ । VS'