পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਵਿਵਸ পরদিন প্রত্যুষে উঠিয়া প্ৰাত:কৃত্যাদি সমাধা করিয়া আমরা বিন্ধ্যবাসিনী দর্শনে অগ্রসর হইলাম। মীৰ্জাপুর হইতে পাঁচ মাইল দূরে গঙ্গাতীরে বিন্ধ্যপৰ্বতের এক উচ্চ শিখরে মা বিন্ধ্যবাসিনীর প্রাচীন মন্দির অবস্থিত, বিন্ধ্যাচল গ্রাম হইতে এই পৰ্বত প্ৰায় দেড় মাইল দূর। বিন্ধ্যাচল গ্রামও গঙ্গাতীরে পর্বত গ্রাত্রে অবস্থিত। আজ কাল বিন্ধ্যাচল গ্রামেই একটী রেল স্টেশন হইয়াছে। সকল টেণ এখানে থামে না। ষ্টেশনের অতি নিকটেই একটী পৰ্বত শিখরে ভগবতী বিন্ধ্যবাসিনীর আর এক মন্দির অবস্থিত । এবং এই মন্দিরের অতি নিকটে এক নানক পন্থী সন্ন্যাসীর ধৰ্ম্মশালা আছে। এই ধৰ্ম্মশালা পাহাড়ের উপরেই নিৰ্ম্মিত। পাহাড়ের এই অংশও আবার একবারে গঙ্গার গর্ভে অবস্থিত সুতরাং ইহার শোভা চমৎকার। পার্বত্য স্তরের গলি পথ ঘুরিয়া এই ধৰ্ম্মশালায় আসিতে হয় । আমরা এই স্থানেই বাসা লইলাম। শিখ সন্ন্যাসী নদীর ধারের দীর্ঘ গৃহটি আমাদিগকে বাসাৰ্থ প্ৰদান করিলেন। ঘরে বসিয়া প্ৰশস্ত জানাল দিয়া দুই দিকে গঙ্গা দেখা যায়। গঙ্গার শোভা এখানে বড় বিস্ময়কর । আমরা যে পারে আছি,-এ পারে নদীর কুলে বহুদূর বিস্তৃত দুরারোহ পর্বত শিখর জলের সীমারেখা পৰ্য্যন্ত বিস্তৃত হইয়া প্রাচীরের ন্যায় চলিয়া গিয়াছে। এই পৰ্ব্বতে নানাজাতীয় পত্রপুষ্প সমন্বিত বহুবিধ বৃক্ষরাজী পূর্ণ জঙ্গল, কিন্তু অপর তীরে এই উচ্চতার ঠিক বিপরীত দৃশ্য—বহুদূর বিস্তৃত বালুকা-কৰ্দমময় বেলাভূমি এবং তৎপরে দৃষ্টিরেখা অতিক্ৰম করিয়াও শ্যামল শস্যক্ষেত্ৰ দিগন্তের কোলে গিয়া মিলাইয়া গিয়াছে। তীরে ধীরে জলচর পক্ষীকুল বিশেষতঃ বিলাকাশ্রেণীর নির্ভয় বিচরণ দেখিতে বেশ সুন্দর। প্রতিরৌদ্রের মৃদুজ্জ্বল আলোকে দূরে শস্য ক্ষেত্রে হরিদ্বর্ণ শুক পক্ষীর বঁাক এখান হইতে ওখানে উড়িয়া বসিতেছে আবার উড়িয়া যাইতেছে, আর শ্যামলশস্যের মস্তকে মৃদু বায়ুতে আন্দোলিত শ্যামল চন্দ্ৰতাপের ন্যায় দেখাইতেছে -এদিকে পর্বত শিখরের উচ্চ বৃক্ষ