পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sts'9-SR গণকে অজ্ঞান করতঃ তাহাদের সর্বস্ব অপহরণ করিত। সেকালে কেহ পুরী কিংবা কাশী যাত্রার নাম করিলে আত্মীয় স্বজনগণের মধ্যে ক্ৰন্দনের রোল উঠিত, চিরদিনের জন্য সকলের নিকট হইতে অন্তিম বিদায় লইয়া আসিতে হইত—ইহা হইতেই অৰ্দ্ধশত বর্ষ পূর্বে পুরী যাতায়াতের ভীষণ ক্লেশ পাঠকগণ হৃদয়ঙ্গম করিতে পরিবেন। আর বাঙলা দেশে ७qभन লোক অতি বিরল, যিনি নিজ ঠাকুরমা, দিদিমা প্রভৃতি প্ৰাচীনাগণের নিকট পুরী যাইবার পথের দুই চারিটী ভয়াবহ ঘটনা শোনেন নাই। তীর্থ মােহাস্ত্ৰ্যে পুরী এতদূর পবিত্র ও আদরণীয় ছিল যে—এত ক্লেশ ও পথকষ্ট ভুলিয়া সংসার-ক্লিষ্ট নরনারী জগন্নাথ দেবের পবিত্র নাম উচ্চারণ করিতে করিতে র্তাহার দর্শনোদেশে মৃত্যুকে বরণ করিয়া পথে বাহির হইত,—তখন সকলের একমাত্র মূল মন্ত্র ছিল “তোমার নাম নিয়ে দাড়ালেম পথে। বঁচি কি বা মরি।” ব্রিটিশ শাসনের কৃপায় এখন আর পুরী যাতায়াতের কোনও রূপ কষ্ট নাই। স্থলপথে গমনাগমনের কষ্টের কথা সংক্ষেপে বলিয়াছি, জলপথেও যাওয়া যাইত কিন্তু তাহাতেও বিশেষ অসুবিধা ছিল। রেল হইবার পূর্বে অনেকেই জলপথে যাতায়াত করিতেন। কলিকাতা হইতে কতকাদূর জাহাজে, কতকাদূর নৌকায় এবং কতকাদূর স্থলপথে যাইতে হইত। সমুদ্র পথে গমন করিতে হইলে কলিকাতা হইতে জাহাজে চাদবালি হইয়া সেখান হইতে খালের মধ্য দিয়া কটক গমন করিতে হইত কিংবা বঙ্গোপসাগরের মধ্য দিয়া জাহাজে একেবারে পুরী যাওয়া য়াইত। যাহারা কটক সহর হইতে পুরী যাইত তাহারা বিখ্যাত “জগন্নাথ সড়ক” দিয়া গরুর গাড়ীতে, পান্ধীতে কিংবা পদব্রজে গমন করিত । কলিকাতা হইতে বরাবর যে রাস্ত কটক পৰ্য্যন্ত আসিয়াছে তাহা মেদিনীপুর, নারায়ণগড় মোগলমারী, জলেশ্বর, বালেশ্বর, ভদ্রক ও যাজপুর দিয়া কটক পৰ্য্যন্তৰিক্তৃত, কটক হইতে জগন্নাথ সড়ক নামে একটা শাখাপথ কটক সহর হইতে পুরী পৰ্য্যন্ত গিয়াছে--কটক হইতে পুরীর দূরত্ব ৫৩ মাইল মাত্র। এই রাস্তাটি বেশ প্রশস্ত, প্রতি তিন হইতে পাঁচ মাইল অন্তর এক একটা সরাই আছে। স্থল পথে যাতায়াতে বহু ক্ষুদ্র ও বৃহৎ নদী পার হইতে হয়। বর্ষার সময় ভিন্ন সে সমুদয় স্বল্পতোয়া স্রোতস্বিনী হাঁটিয়াই পার হওয়া যাইত। এক বর্ষার