পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ess-a প্ৰত্যুষে গাত্ৰোত্থান পূর্বক সমুদ্র তীরে আসিলেন এবং ভগবান বিষ্ণুর আদেশমত দারুব্রহ্মরূপে তাহার দর্শন পাইলেন। রাজার সঙ্গীয় সমুদয় অনুচরবর্গ ও হস্তী মিলিয়া কোনরূপেই সেই কাষ্ঠখণ্ড সরাইতে পারিল না। রাজা এইরূপ বিফল মনোরথ হইয়া দুঃখিতান্তঃকরণে বাটীতে প্ৰত্যাবৰ্ত্তন করিলেন, সেই রাত্রিতে পুনরায় স্বপ্নে ভগবান তঁহাকে আদেশ করিলেন যে “বৎস ! আমি ভক্তের অধীন, ভক্ত ভিন্ন কেহই আই কাষ্ঠ নাড়িতে পারগ। হইবে না, তুমিও ভক্ত শবর কল্য গিয়া কাষ্ঠ স্পর্শ করিলে উহা আপনা হইতেই রথে উঠিবে।” পরদিন রাজা শবরকে ডাকাইয়া আনিয়া সমুদ্র তীরে গমন করিলেন এবং উভয়ে উহা স্পর্শ করিলেন। কি আশ্চৰ্য্য ! যে কাষ্ঠখণ্ড সহস্ৰ সহস্ৰ লোক ও মহাবলশালী হস্তী যুথ বিন্দুমাত্রও স্থানান্তরিত করিতে পারে নাই তাহা ইন্দ্ৰদ্যুম্ন ও শবরের স্পর্শ মাত্রেই রথে উঠিল, সর্বপ্ৰথমে বৰ্ত্তমান গরুড়স্তম্ভ যে স্থানে আছে, সেখানে দারুখণ্ড স্থাপিত হইল। সুদক্ষ সূত্রধরগণের উপরে রাজা ইন্দ্ৰদ্যুম্ন ঐ কাষ্ঠখণ্ড দ্বারা মূৰ্ত্তি নিৰ্ম্মাণ করিবার ভার অপণ করিলেন । সপ্ত দিন অতীত হইলে রাজা সূত্রধরগণ কিরূপ মূৰ্ত্তি নিৰ্ম্মাণ করিল তাহ দেখিবার জন্য আসিয়া দেখিলেন যে সূত্ৰধরগণ কিছুই করিতে পারে নাই, যেরূপ কাষ্ঠ ছিল তদ্রুপই আছে, ইহাতে রাজা ইন্দ্ৰদু্যাক্স মহা ক্ৰোধান্বিত হইয়া বলিলেন যে “যদি আগামী কল্য প্ৰত্যুষের মধ্যে মূৰ্ত্তি নিৰ্ম্মাণ করিয়া না দিতে পার তাহা হইলে তোমাদের প্রাণদণ্ড করিব।” সূত্ৰধরগণ বলিল যে – “মহারাজ আমাদের কোনও দোষ নাই, আমরা এ বিষয়ে যথেষ্ট চেষ্টা করিয়াছি, কিন্তু কিছুই করিয়া উঠিতে পারি নাই, এই দেখুন আমাদের অস্ত্রশস্ত্ৰ সমূহ পৰ্য্যন্ত ভগ্ন হুইয়া গিয়াছে।” রাজার ক্ৰোধ কিছুতেই উপশম হইল না,-তিনি কিছুতেই তঁহার আদেশ ফিরাইয়া নিলেন না। ዅ সূত্ৰধরগণ এইরূপ ভয়ানক বিপদে পতিত হইয়া একমনে শ্ৰীশ্ৰীজগন্নাথ দেবকে ডাকিতে লাগিল, তাহাদের করুণ প্রার্থনায় পরম দয়াল জগন্নাথ দেবের অনুকম্প হইল,—সূত্ৰধরগণ দৈববাণী শুনিতে পাইল যে “তোমাদের কোনও ভয় নাই, আমি কল্য প্ৰত্যুষে স্বয়ং রাজদরবারে উপস্থিত হইয়া তোমাদের প্রাণরক্ষা করিব,” সূত্রধরগণ নিশ্চিন্ত হইল। " sov