পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুরী বা জগন্নাথ। । পরদিন প্ৰত্যুষে রাজা ইন্দ্ৰদ্যুম্ন দরবারে বসিয়া রাজকাৰ্য্য পৰ্য্যালোচনায় প্ৰবৃত্ত হইয়াছেন, এমন সময় প্রহরী আসিয়া করযোড়ে নিবেদন করিল যে “মহারাজা, একজন অদ্ভুতাকৃতি বৃদ্ধ সূত্ৰধর আপনার সহিত সাক্ষাৎ করিতে চাহে, সে কোনরূপেই আমার নিষেধ বাক্য গ্ৰাহা করিতেছে না।” মহারাজা সেই সূত্ৰধরকে সভায় আনয়ন করিবার আদেশ দেওয়ার পর প্রহরীসহ বৃদ্ধ সূত্ৰধর রাজ দরবারে উপস্থিত হইল, তাহার বিশ্ৰী কালো রং, তদুপরি আবার পায়ে গোদ, পিঠে কুঁজ, চােখে পিচুটী, শোণের নুড়ির মত মাথায় পক্ক কেশ। এই অদ্ভূতাবয়বের সূত্ৰধরকে সভায় দেখিতে পাইয়া, রাজার সভাসদ বর্গ নানাপ্রকার বিদ্রুপাত্মক বাক্য প্রয়োগ করিতে লাগিল। মন্ত্রী বলিলেন “লোকের ধন-তৃষার আর কিছুতেই নিবৃত্তি হয় না, এই ব্যক্তি আজ বাদে কাল মৃত্যুমুখে পতিত হইবে, তবু অর্থের লোভ ছাড়িতে পারে নাই।” মহারাজা ইন্দ্ৰদ্যুম্ন সূত্ৰধরকে তাহার পরিচয় জিজ্ঞাসা করায় সে উত্তর করিল যে “আমার নাম বাসুদেব মহারাণা, আমার অসাধ্য কোন কাৰ্য্যই পৃথিবীতে নাই, আমি স্বয়ং বিশ্বকৰ্ম্মার গুরু, আমাকে আপনি যে কার্য্য সম্পাদন করিতে আদেশ করিবেন আমি তাহ দেখিতে দেখিতে সম্পন্ন করিয়া দিব । আমার উপর কাৰ্য্যের ভার অর্পণ করিলেই বাক্যের যথার্থতা উপলব্ধি করিতে সক্ষম হইবেন।” রাজা বুদ্ধ সূত্রধরের বাক্যে বিস্মিত হইয়া স্বয়ং তাঁহাকে সঙ্গে করিয়া সেই বৃক্ষের निक উপস্থিত হইলেন, সকলে দেখিয়া অবাক হইল যে বৃদ্ধের নখাঘাতেই বৃক্ষের ছাল উঠিয়া গেল। ইহাতে রাজা নিতান্ত আশ্চৰ্য্যান্বিত হইয়া বলিলেন “আপনার উক্তি প্ৰকৃত বটে ; আপনি অসাধারণ ব্যক্তি, কিন্তু আমি জিজ্ঞাসা করি যে, কয় দিবসের মধ্যে আপনি এই কাষ্ঠ দ্বারা আমার অভিপ্রেত মুৰ্ত্তি নিৰ্ম্মাণ করিয়া দিতে পারিবেন?” ইহাতে বৃদ্ধ সূত্রধর বলিল যে “আমি মন্দিরের ভিতরে দ্বার রুদ্ধ করিয়া একুশ দিনের মধ্যে প্ৰতিমা গড়িয়া দিৱ, কেহই এই কয়েক দিন মন্দিরের দ্বার খুলিতে পরিবে না, যদি খোলে তবে তৎক্ষণাৎ আমি উহা পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া যাইব, কাহারও অনুরোধ উপরোধ শুনিব না।” রাজা সম্মত ইইলেন। বৃদ্ধ মন্দিরের দ্বার রুদ্ধ করিয়া কাৰ্য্যে প্রবৃত্ত হইল। দিনের পর দিন GS . - 809