পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুরী বা জগন্নাথ। । আবির্ভাব ও তিরোভাব হইবে, আর কুড়ি বৎসরেই হউক বা পঁচিশ বৎসরেই হউক জীৰ্ণ দারুমূৰ্ত্তির পুনর্বারা নিৰ্ম্মাণ হইয়া থাকে। আজকাল প্রায়ই নবকলেবর না হইয়া কেবল পুননিৰ্ম্মাণ হইয়া থাকে। মন্দিরের ইতস্ততঃ বেড়াইতে বেড়াইতে একটী উচ্চ বারান্দা হইতে নীল লহরীমালা বিভূষিত। ৰঙ্গোপসাগরের অনির্বচনীয় সৌন্দৰ্য্য দেখিয়া মােহিত হইয়াছিলাম, এখান হইতে সমুদ্রের ভৈরব গৰ্জন শুনিতে পাওয়া যায় না, এ সম্বন্ধে এইরূপ জন-প্ৰবাদ প্ৰচলিত আছে যে সমুদ্রের গর্জন শুনিয়া সুভদ্রাদেবীর হাতদুইটী পেটের ভিতর ঢুকিয়া গিয়াছিল! তাহাতে শ্ৰীশ্ৰীজগন্নাথদেব সমুদ্রকে আদেশ করিলেন যে তোমার শব্দ যেন আমার মন্দিরে শ্রীকৃত না হয় । । পুরীর মন্দিরের উচ্চতা দেখিলে আশ্চৰ্য্য বোধ হয় ! এতদূর উচ্চে প্ৰকাণ্ড প্ৰকাণ্ড প্ৰস্তরখণ্ড সকল কিরূপে উত্তোলিত হইয়াছে, অনেক ইংরেজ ইঞ্জিনিয়ার পর্য্যন্ত তাহা চিন্তা করিয়া বিস্ময় শ্ৰকাশ করিয়া গিয়াছেন। আমরা এক স্থানে একখণ্ড প্ৰকাণ্ড প্ৰস্তর পতিত দেখিলাম, শুনিলাম যে উহা মূলমন্দির হইতে পতিত হইয়াছিল, এ পৰ্য্যন্ত তাহা আর পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। শ্ৰীক্ষেত্র ধামে আরও অনেক তীর্থস্থান আছে ; তন্মধ্যে নরেন্দ্ৰ, মাৰ্কণ্ড, শ্বেতগঙ্গা, ইন্দ্ৰদ্যুম্ন ও চক্ৰতীর্থই প্ৰধান। এ সকল তীর্থের মাহাত্ম্যও নারদপুরাণ, ব্ৰহ্মপুরাণ, কপিলসংহিতা, উৎকল খণ্ড প্রভৃতি বহু প্ৰাচীন গ্রন্থে সবিস্তারে লিখিত আছে,-ইহা ছাড়া আরো যে কত উপতীর্থ আছে তাহা লিখিয়া প্ৰকাশ করা অসম্ভব ও অনাবশ্যক, বিশেষ নূতনত্ব কিংবা প্ৰাচীনত্ব অধিকাংশ স্থলে দৃষ্ট হয় না। ধৰ্ম্মপ্ৰাণ ভারতবর্ষে ধৰ্ম্মের নামে যে কত । প্ৰকার ভণ্ডামি চলিয়া থাকে এবং নিরীহ যাত্ৰিগণের নিকট হইতে কত । কৌশলেই যে ধূৰ্ত্ত পাণ্ডাগণ শোণিত সম অৰ্থগ্রাস করিয়া থাকে তাহা তীর্থস্থলে দেখিয়া বিস্মিত ও দুঃখিত হইতে হয়। ] ۔: ', আমরা এ সকল তীর্থ দৰ্শনাভিলাষী হইয়া সর্বাগ্রে নরেন্দ্ৰ সরোবরের তীরে উপনীত হইলাম। এই প্ৰকাণ্ড সরোবরটি অত্যন্ত প্ৰাচীন, ইহার চারি তীর ইষ্টকম্বারা বঁধা । নরেন্দ্র সরোবরের তীরের চারিদিকের দৃশ্য বড়ই সুন্দর, কালোজলে সূৰ্য্যের কিরণরাশি চিকমিক ঝিকমিক করিতেছে, একদিন শ্ৰীশ্ৰীচৈতন্য প্ৰভু ইহার কালোজিলে RSFSR