পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই সরোবরাট সুমিষ্ট জলদ্বারা পরিপূর্ণ—শ্ৰীক্ষেত্রের মধ্যে ইহার জলই । সর্বাপেক্ষা মিষ্ট। এখানে আসিয়া লোকে শ্ৰাদ্ধাদি কাৰ্য্য করিয়া বালুকার । পিণ্ডদেয়। চক্রতীর্থের অনতিদূরে উত্তরদিকে চক্রনারায়ণের মন্দির । অবস্থিত। মন্দিরের ঈশান কোণে শৃঙ্খলাবদ্ধ হনুমানের মূৰ্ত্তি দেখিলাম। চক্ৰতীর্থ সমুদ্র হইতে এক পোয় পথও দূর হইবে না ; ; স্বৰ্গদ্বার । ইহাও সমুদ্রের বেলাভূমিতে অবস্থিত। শ্ৰীশ্ৰীজগন্নাথদেবের মন্দির হইতে নৈঋত কোণে প্ৰায় আধ মাইল দূরে বিরাজিত, রাজা ইন্দ্ৰদ্যুম্বের প্রার্থনায় সর্বপ্রথমে ব্ৰহ্মা। এ স্থানে অবতরণ করিয়াছিলেন বলিয়াই ইহার | নাম স্বৰ্গদ্বার হইয়াছে। এ স্থানে যে কোন সময়ে স্নান করিলেই অক্ষয় । পুণ্য সঞ্চয় হয়। এ স্থানে স্বৰ্গদ্বারের সাক্ষীস্বরূপ কাণপাতা হনুমান মুক্তি আছে । শুনিলাম যে সমুদ্রের শব্দে সুভদ্ৰা অত্যন্ত ভীত হন এবং তাহাতে তাহার হস্ত উদর মধ্যে প্রবেশ করে ; তাহাতে জগন্নাথদেব । সমুদ্রকে আদেশ করেন যে “তোমার শব্দ আমার মন্দিরে না। আইসে।” । সে নিমিত্তেই শ্ৰীশ্ৰীজগন্নাথদেবের আজ্ঞায় হনুমান কাণ পাতিয়া সমুদ্রের - ভীষণ আরাব শ্রবণ করিতেছে ও সমুদ্রের তরঙ্গ যাহাতে মন্দিরের নিকটে না আসিতে পারে তাহার জন্য পাহাড় দিতেছে । পুরুষোত্তম মাহান্ত্র্যে লিখিত আছে যে সূৰ্যগ্ৰহণ সময়ে এ স্থানে স্নান করিলে মানুষের কোটী জন্মের পাপ দূরীভূত হইয়া অনন্ত স্বৰ্গলাভ হইয়া থাকে। স্বৰ্গদ্বারের অনতিদূরে শ্ৰীশ্ৰীকৃষ্ণ চৈতন্যদেবের পরম ভক্ত যবন-কুলোন্তৰ । হরিদাস সাধুর সমাধি অবস্থিত। বারাঙ্গনার হাবভাব বিলাসময়ী কটাক্ষ একদিন যে জিতেন্দ্ৰিয় মহাপুরুষের ধ্যান ভঙ্গ করিতে পারে নাই, হে সমুদ্র, शनिशाना गबादि । তোমার এই বৃথা আস্ফালনে কি কখনাে তঁহার অনন্ত ধ্যান |” ”’ ভঙ্গ হইবে ? আমরা ভক্তিভরে এই পবিত্র সমাধি-তীর্থে। প্ৰণাম করিয়া তৃপ্তি বোধ করিলাম। এখানে মন্দির মধ্যে নানাবিধ দেবমূৰ্ত্তি বিরাজিত আছেন। বৈষ্ণব-ভক্তগণের নিকট হরিদাসের সমাধি মহাতীৰ্থ। যতদিন পৰ্য্যন্ত পৃথিবীতে জিতেন্দ্ৰিয় পুরুষগণের প্রতি সম্মান প্ৰদৰ্শিত হইবে उ তিনি এই পরম ভক্তের নাম জগতে অমর হইয়া রহিবে। 8's