পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাশী । কাশী যে কেবল পুণ্যক্ষেত্র বলিয়া বিখ্যাত তাহা নহে-—ব্যবসাবাণিজ্যেরও ইহা একটা প্ৰধান কেন্দ্ৰ। নানা দেশ-দেশান্তর হইতে বহু পণ্য দ্রব্যাদি। এখানে আনীত ও বিক্রীত হয় । কাশীর রোসমী। কাপড়, শাল, পিত্তলের দ্রব্যাদি, বারাণসী কাপড়, হীরা জহরতাদি জরির কাৰ্য্য এবং নানাপ্রকার খেলনার জন্য ইহা বিশেষ প্ৰসিদ্ধ। প্ৰায় প্ৰত্যেক প্রধান প্ৰধান হিন্দুনরপতি এবং জমীদারগণের এস্থানে এক একটী করিয়া বাড়ী আছে এবং তঁাহারা অনেক সময়ে সপরিবারে এস্থানে বাস করিয়া থাকেন। দুৰ্গ, বারিক, বিশ্ববিদ্যালয়, রেলষ্টেসন, ডাকঘর, আদালত ইত্যাদি সমুদয়ই এখানে আছে। পূর্বে ভারতের নানা স্থান হইতে বেদাধ্যয়নের নিমিত্ত ব্ৰাহ্মণগণ আগমন করিতেন, এখনও আসেন। কিন্তু পূর্বের প্রসিদ্ধি অন্তহিত হইয়াছে। কাশ্মীরের মহারাজার বাড়ীতে একটী উত্তম সংস্কৃত বিদ্যালয় আছে, সেখানে বহু বিদ্যাধ্যায়ীকে বেদাদি শাস্ত্ৰ শিক্ষা দেওয়া হইয়া থাকে। কাশীতে কলের জল হওয়ার পর হইতে স্বাস্থ্যের যথেষ্ট উন্নতি হইয়াছে। বিসূচিকা রোগ এখানে নাই বলিলেই হয় –মা জাহ্নবীর পবিত্র জলের এমনি অত্যাশ্চৰ্য্য শক্তি যে উহা পান করিলে কোনও রূপ পেটের পীড়া থাকিতে পারে না । এখানে যেমন অল্পব্যয়ে থাকা যায়---বঙ্গদেশের কোথাও তদ্রুপ সম্ভবপর হয় না । কাশীতে প্ৰত্যেক দ্রব্যই সস্তা, বিশেষতঃ ফলমূল, শাকসব্জীর ত কথাই নাই,--আনেক দীনহীনা বিধবা কেবল মাত্র ২॥০, ৩২ টাকা মাসিক ব্যয়ে এই পুণ্যতীর্থে বাস করিতেছেন। কাশীর একদিকে যেমন ধৰ্ম্মের পবিত্র স্রোত প্রবহমান, আবার অপরদিকে তদ্রুপ ব্যভিচারের স্রোত দিন দিন বৃদ্ধি পাইতেছে ; এমন পাপানুষ্ঠান নাই যাহা বৰ্ত্তমান সময়ে কাশীতে অনুষ্ঠিত না হয়। আলো ও অন্ধকারের পার্থক্য এ স্থানে সুস্পষ্ট দেখিতে পাওয়া যায়। কাণীর অপর তীরে ব্যাসদেবের নিৰ্ম্মিত ব্যাসকাশী অবস্থিত। আমরা একদিন প্ৰত্যুষে ব্যাসকাশী দেখিতে যাত্ৰা করিলাম। তরণীযোগে নদী পার হইলাম। ভাগীরথীবাক্ষ হইতে তরুণ রবির কনক-কিরণ-মণ্ডিত মন্দির-চুড়া ও কাশীর সৌন্দৰ্য্য বড়ই মনোরম বোধ হইয়াছিল। পরপারে উপনীত হইয়া বালুকাময় তটভূমি উত্তীর্ণ পূর্বক নানা কথা । निकोंभ । R.