পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৬৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । জন্তুর মূৰ্ত্তি অঙ্কিত রহিয়াছে তাহা প্ৰাচীন শিল্পকলার চূড়ান্ত নিদর্শন। এ সমুদয় মূৰ্ত্তি ধৰ্ম্ম বিপ্লব হেতু নানাপ্রকারে বিরূপ ও ভগ্ন হইলেও শিল্পীর অপূৰ্বৰ কলানৈপুণ্য ও কার্যাকুশলতার সাক্ষ্য দিতে পশ্চাদপদ নহে। কোথাও বা দিবা বস্ত্ৰালঙ্কারে বিভূষিত রমণীর মনোজ্ঞ চিত্র অতিশয় সূক্ষমভাবে খোদিত করা হইয়াছে, কোথাও বা রণবেশ পরিহিত সজ্জিত অশ্বারোহী বীর পুরুষ যুদ্ধ স্থলে যাইবার জন্য উদ্যত হইয়াছে,--তাহার কেমন সুবিশাল বক্ষ, কেমন সুন্দর বীরত্বব্যঞ্জক চাহনি ! স্তম্ভ, কাৰ্ণিস, গবাক্ষ, হস্তী যুথ প্রত্যেকের গঠনেই যেরূপ সূক্ষ্য মনোবৃত্তিপরিচালনা নিবন্ধন স্বাভাবিক ও মনোজ্ঞ রচনা কৌশল প্ৰদৰ্শিত হইয়াছে তাহা দেখিলে সহজেই অনুমান হয় যে প্রাচীন ভারতে শিল্প-বিজ্ঞান কতদূৱ উন্নত ছিল। পাৰ্বতীর গাত্রের বসনখানিতে যেরূপ অত্যুৎকৃষ্ট কারুকাৰ্য্য রহিয়াছে— তাহা দৰ্শন করিলে শিল্লিগণকে অলৌকিক দৈব শক্তি সম্পন্ন বলিতে কুণ্ঠ বোধ হয় না--- অতএব সাধারণ লোকে যে এই সমুদয়কে বিশ্বকৰ্ম্মার হস্ত নিৰ্ম্মিত বলিবে তাতাতে বিস্ময়ের কি আছে ? পার্দীতী মন্দিরের অনতিদূরে পাদ হরা পুষ্করিণী। ইহার চতুঃপাশ্বে ছোট ছোট বহুতর শিব মন্দির, কতকগুলিতে শিবলিঙ্গ আছে, কতকগুলিতে নাই ! এত সরোবরের উৎপত্তি সম্বন্ধে শিবপুরাণে লিখিত আছে যে কীৰ্ত্তি ও বাস নামক দুই প্রতাপান্বিত অসুর ভ্ৰাতা ভগবতীর অপূৰ্ণ রূপলাবণ্যময়ী বিশ্ববিমোহিনী মূৰ্ত্তি দর্শনে বিমোহিত হয় ও তাঁহাকে বিবাহ করিবার জন্য উভয়েই উন্মস্থ হয়, দেবী এই অসুরদ্বয়কে বলেন যে “যে ব্যক্তি আমাকে স্বন্ধে ও মস্তকে উত্তোলন করিতে পারগ হইবে আমি তাহারই পত্নী হুইব । কামমোহিত ভ্ৰাতৃদ্বয় দেবীর বিচনানুযায়ী কাৰ্য্যা করিতে অগ্রসর হইলে তিনি তাহাদিগকে পদদ্বারা চাপিয়া বিনাশ করেন, --পদভরে সেই স্থান নিন্ম হইয়া এই সরোবর নিৰ্ম্মিত হইয়াছে । “পাদেন প্রোথয়ামাস ভূব পাির্নত নন্দিনী । ততস্তাবসুরে বীরাবসৃংস্ত্যক্তা রসাতলম। জগাতুস্তত্র যা দেবী চাকার হ্রদ মুস্তমম ॥” পাদহীরা পুষ্করিণী । 8ዓ8