পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৬৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খণ্ডগিরি ও উদয়গিরি । ডাকবাংলা আছে, ভ্ৰমণকারিগণ সেস্থানে বিশ্রাম করিয়া থাকেন। খণ্ডগিরির পদ প্রান্তে একটি নোটিস বোর্ডে লিখিত আছে —“You are re quested not to write your names in the caves or the temples.” অর্থাৎ এই গিরিগুহাতে বা মন্দিরে আপনাদের নাম লিখিবেন না। এই প্রার্থনা ; কিন্তু এই অনুরোধবাক্য অতি অল্পলোকেই পালন করিয়া থাকে। হায়! মানবগণ প্রত্যেকেই পৃথিবীতে নিজ নিজ স্মৃতিচিহ্ন রাখিবার জন্য পাগল, কিন্তু পৃথিবী কি কাহাকেও মনে রাখিয়াছে ? কত রাজা, কত সম্রাটু, কত কোটিশ্বর, কত প্ৰবল প্ৰতাপান্বিত ব্যক্তিগণ জগতে পদাঙ্করেখা অঙ্কিত করিয়া গিয়াছেন, কিন্তু আজ এই সর্বগ্রাসিনী রাক্ষসী বসুমতীকে তাহাদের ক'পা জিজ্ঞাসা কর, সে এক भू2 ধূলিকণামাত্র দেখাইয়া দিবে। তবু অন্ধ আমরা জগতে স্মৃতি রাখিবার জন্য পাগল। অনেক হিন্দু এই বৌদ্ধ কীৰ্ত্তিরাশি সমলিঙ্কত স্থান দেখিতে আইসেন না—পূর্বেও ইহা হিন্দুদিগের ত্যজ্য ছিল। এখনও ইহা হিন্দুতীর্থ নহে, সাধারণ তীর্থ যাত্ৰিগণের মধ্যে অনেকে ইহার অস্তিত্ব পৰ্য্যন্তও অবগত নহেন, কাজেই অভিজ্ঞ ব্যক্তি ব্যতীত অতি অল্পলোকেই এ সকল গুম্ফা ইত্যাদি দর্শন করিয়া থাকেন । উদয়গিরির পাদদেশে একটি পর্ণকুটির আছে, তাহা বৈরাগীর মঠ নামে পরিচিত। মঠাধারী একটা বৃদ্ধ ব্যক্তি। গৃহাভ্যন্তরে দেওয়ালের গাত্ৰে শ্ৰীচৈতন্যদেবের মূৰ্ত্তি অঙ্কিত ও বহু খড়ম সাজান রহিয়াছে। মঠাধারী বৃদ্ধ এই সমুদয় খড়মের মধ্য হইতে এক জোড়া খড়ম চৈতন্যদেবের খড়ম বলিয়া দেখাইয়া থাকেন। একথা কতদূর সত্য তাহা জানিবার অন্য উপায় নাই। এই পৰ্পর্বতদ্বয় লেটারাইট ও বালু প্ৰস্তর দ্বারা গঠিত। খণ্ডগিরিতে আরোহণ করিবার জন্য লতা পাতার মধ্য দিয়া প্ৰস্তার-নিৰ্ম্মিত সোপানাবলী আছে, সোপান গুলির অধিকাংশ স্থলেই ভাঙ্গিয়া গিয়াছে। সময় সময় নানাজাতীয় বন্য কুসুম পথের দুই পার্শ্ব সুন্দরীরূপে সুশোভিত৷ করিয়া রাখে। ফুলের উগ্ৰগন্ধে বন-রাজীর পত্রান্দোলিত সরু সরী শব্দে শীতলতার সহিত সজীবতা আনিয়া দিয়া থাকে। সোপানের কিঞ্চিৎ উপরেই চারিটীি গুম্ফা বিরাজিত ; একটা ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পতিত হইয়াছে ; 8brQ