পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৬৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । পবিত্র ছিল, বৰ্ত্তমান সময়ে সেস্থানে বৌদ্ধভিক্ষুক বা বৌদ্ধধৰ্ম্মাবলম্বী কোন গৃহী দেখিতে পাওয়া যায় না। স্তম্ভগুলি ঝোপে ঝাপে ও কণ্টক বনে সমাচ্ছন্ন। মন্দিরদ্বয়ের কিঞ্চিৎ নিম্নে সমতল ভূমিতে এই দেবসভা বহুদূর বিস্তৃত। মধ্যস্থলের স্তম্ভ ভামকুণ্ড, রাধাকুও দুইটী অপর অপর স্তম্ভ হইতে কথঞ্চিৎ উচ্চ ও উহার ও আকাশগঙ্গা। দিকে দুইটী বুদ্ধের প্রতিমূৰ্ত্তিও রহিয়াছে। দেবসভার পূর্বদিকে কিয়দ রে গমন করিলে, ভিন্ন ভিন্ন স্থানে তিনটা কুণ্ড দেখিতে পাওয়া যায় ; একটিার নাম শ্যামকুণ্ড, একটার নাম রাধাকুণ্ড ও অপরটির নাম আকাশগঙ্গা । এই জলাশয় কয়টির আকৃতিই চতুষ্কোণ ও প্রস্তরগ্রথিত ; অবতরণের নিমিত্ত সোপােনাবলীও রহিয়াছে, ইহাদের সহিত একটীি প্রস্রবণের সংযোগ আছে, তাহা না হইলে এইরূপ উচ্চ পৰ্বতোপরি জল থাকা সম্ভবপর হইত না । শ্যামকুণ্ড ও রাধাকুণ্ডের জল অতি সুন্দর ও স্বচ্ছ, বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মৎস্য সলিল মধ্যে খেলিয়া বেড়াইতেছে। আকাশগঙ্গার জল বিবৰ্ণ, অপরিস্কার ও দুৰ্গন্ধবিশিষ্ট ; কে জানে কতকাল হইতে ইহার এইরূপ অব্যবহাৰ্য্য অবস্থায় পড়িয়া রহিয়াছে। এককালে ইহাদের সুসুিগ্ধ শীতল ও নিৰ্ম্মল সলিলরাশিই বোধ হয়। গুস্ফাবাসীদিগের তৃষ্ণা নিবারণ করিত। বৌদ্ধযুগের ও বৌদ্ধভিক্ষুগণকৰ্ত্তক ব্যবহৃত এসকল কুণ্ডের নাম “শ্যামকুণ্ড” ও “রাধাকু ণ্ড” শুনিয়া আশ্চৰ্য্যান্বিত হইতে হয়। বোধ হয়, ইহা হিন্দুদের কর্তৃক আধুনিক এইরূপ নূতন নামে অভিহিত হইয়া থাকিবো। খণ্ডগিরির উচ্চতা ১২৩ ফিট মাত্র। খণ্ডগিরি দর্শনান্তে আমরা উদয়গিরি দর্শন করিতে গমন করিলাম, এখনও যাহা কিছু দেখিবার তাহা উদয়গিরিতেই আছে। ইহার অপর নাম ললিতগিরি। অমর কবি বঙ্কিমচন্দ্ৰ এই পৰ্পর্বতের খোদিত প্ৰস্তরমূৰ্ত্তি সমূহ দৰ্শন করিয়া লেখনীমুখে যাহা ব্যক্ত করিয়া গিয়াছেন, পাঠকগণের তৃপ্তির জন্য এবং শিল্প-নিপুণতার অনির্বচনীয় মহত্ত্ব বুঝাইবার জন্য এস্থানে তাহা উল্লেখ না করিয়া থাকিতে পারিলাম না । উদয়গিরির প্রতি গুম্ফার নিকট যখন যাইতেছিলাম ও বিমুগ্ধ চিত্তে দর্শন করিতেছিলাম--তখনই তঁহার সেই অমর বর্ণনা-কাহিনী উদয়গিরি । 8kyህ”