পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৬৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খণ্ডগিরি ও উদয়গিরি জলবিম্বের ন্যায় মিলাইয়া গিয়াছে। এই চিত্ৰসম্বন্ধে প্রত্নতত্ত্ববিদগণের ভিন্ন ভিন্ন মত থাকিলেও বোধ হয়, ইহা অনুমান করা অসঙ্গত নহে যে, তৎকালীন কোনও বিশেষ সামাজিক ঘটনা অবলম্বন করিয়াই এই চিত্রগুলি cशांड् िछ्छेशांछिळ । এই দ্বিতল গুম্ফাটি রাণীগুম্ফার পশ্চিমদিকে অবস্থিত ; ইহা দ্বিতল হইলেও, সর্দবিষয়ে পূর্দোক্ত গুম্ফা হইতে নিকৃষ্ট । এখানে কয়েকটি হস্তীর মূৰ্ত্তি অতি সুন্দরভাবে গুম্ফা স্বৰ্গপুরী গুম্ফ। ভ্যন্তরে খোদিত রহিয়াছে ; ইহার উপরে ও নীচের তলে দুইটি করিয়া মোট চারিটি গৃহ ও সম্মুখভাগে একটি বারাণ্ড আছে, বারাণ্ডার স্তম্ভগুলি একটিও ভাল অবস্থায় নাই। এই গুস্ফার চতুৰ্দিকে ধ্যানমগ্নপর্বতগাত্রে প্রসারিত রাস্তার মধ্যে বড় বড় গাছগুলি হইতে পতিত রাশি রাশি শুষ্কপত্রগুলি আমাদের পদতলে পতিত হওয়ায় মীর মর ধ্বনি হইতেছিল। বিহগকল-কাকলীমুখরিত-নিবিড়চ্ছায়াবৃত এই গুম্ফাগুলির গার্শ্বে এমনি একটি নিস্তব্ধ নীরবতা বিরাজমান যে, প্ৰাণে এক মুহূৰ্ত্তের মধ্যে অতীতের সমগ্ৰ ইতিহাস তোলপাড় করিতে থাকে। যে সমুদয় ধৰ্ম্মপ্ৰাণ অহিঁতগণ প্রাণপণে অতুল ধৈর্য্য ও অধ্যবসায়ের সাহায্যে কারুকার্য্যসম্পন্ন-গুম্ফাগুলিকে নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিল, তাহদের মনে তখন একদিনের জন্যও এ ভাবের উদয় হয় নাই যে, এই গুম্ফাগুলি একদিন ব্যাস্ত্ৰভালুকের আশ্রয় হইবে। আমরা গুস্ফার পার্শ্বে বসিয়া ক্লান্তি দূর করিলাম ; ধীরে স্নেহময়ী প্ৰকৃতি জননী তাহার শ্যামাঞ্চল আন্দোলিত করিয়া ব্যাজন করিতেছিলেন। এখানে বসিয়া আমি আপনাকে কোন সুদূর অতীতের এক গৌরবান্বিত মানব বলিয়া অনুভব করিতেছিলাম। মনে হইতেছিল, সিদ্ধার্থের মহৎ জীবনী,-মনে হইতেছিল, সেই ত্যাগী রাজসন্ন্যাসীর ধনৈশ্বৰ্য্য-স্নেহ-মায়া-প্রোমের অমানুষিক বন্ধন ছেদন । পতিপ্রাণী অপূর্ব রূপলাবণ্যবতী গোপার প্রেম তুচ্ছ করিয়া নিদ্রিতাসুরসুন্দরীর অৰ্দ্ধবিকশিত শতদলের মত প্ৰফুল্ল ও বিমল হাস্য রেখা বিভাসিত কমনীয় বদনের শোভা দর্শনেও প্রীতি ও প্রেমের আকর্ষণ কেমন করিয়া ছেদন করিলে সন্ন্যাসী ? সে যে আর তোমা বই জানিত না । 8SG