পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৮৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভস্মণ । সন্ধ্যার ধূসর ছায়া চারিদিকে ব্যাপ্ত হইতে লাগিল। এক দিকে সমুদ্রের গৰ্জন, অন্যদিকে নগরের কল কোলাহল। কিন্তু সেই সন্ধ্যার উন্মুক্ত গগনতলে ছাদের উপর উপবেশন করিয়া প্ৰাণে যে অনন্ত শান্তি অনুভব করিতেছিলাম, তাহার সহিত সে সকলের কোন সংস্রবই ছিল না। পরদিবস সারাদিন বিশ্রামার্থ বাসায়ই অবস্থান করিলাম। অতিরিক্ত শ্রম নিবন্ধন কোনও পীড়া হইলে বড়ই বিপদে পড়িতে হয়। পরদিন প্ৰত্যুষে নৌকায় আরোহণ করিয়া ধনুক্ষোটিতীৰ্থ দৰ্শন করিতে রওয়ানা হইলাম। সমুদ্রের তীর ধরিয়া নৌকা ধীরে ধীরে অগ্রসর হইতে লাগিল, ৩৪ ঘণ্টা পরেই আমরা ধনুকতীর্থে পহুছিলাম। কথিত আছে যে শ্ৰী রামচন্দ্ৰ লঙ্কা হইতে প্ৰত্যাবর্তন কালে এস্থানে ধনুক রাখিয়া বিশ্রাম করিয়াছিলেন। রামেশ্বরম হইতে ইহা ২৪ মাইল দূরে অবস্থিত। সমুদ্রের তীরে তীরে যখন তরণী সহযোগে আমরা আমাদের গন্তব্য পথাভিমুখে অগ্রসর হইতেছিলাম, তখন দূর হইতে তীরবর্তী নারিকেলতরুরাজি সমাকীর্ণ গ্রামগুলি কুঞ্জবনের ন্যায় প্রতীয়মান হইতেছিল। বালুকপূৰ্ণ তাঁটপ্রদেশে সূৰ্য্যের প্রখর কিরণে দৃকপাত না করিয়া শিশুর দল ক্রীড়া করিতেছিল । ধনুষ্কোটি তীর্থ একটী ক্ষুদ্র গ্রাম। কেহ কেহ বলেন যে লঙ্কা বিজয়ের পরে শ্ৰীরামচন্দ্ৰ বিভীষণের অনুরোধে স্বীয় ধনুষ্কোটি দ্বারা সেতু ভঙ্গ করেন ; সেই জন্য ইহার নাম ধনুক্ষোিট তীর্থ হইয়াছে। যে ব্যক্তি শ্ৰী রামচন্দ্ৰ কৃত ধনুক্ষোটির রেখা দর্শন করে, তাহার আর মানব জন্ম পরিাগ্ৰহণ করিয়া গর্ভবাস যন্ত্রণা সহ্যু করিতে হয় না । রামেশ্বরমে বহু তীর্থ বিরাজমান, সে সকলের বিস্তৃত বিবরণ দেওয়া অনাবশ্যক। প্ৰায় প্রতি তীর্থ এবং উপতীর্থেই লিঙ্গমূৰ্ত্তি বিরাজমান এবং অধিকাংশই এক প্রকার, কাজেই বিস্তারিত বিবরণ দিলেও পাঠকগণের তাদৃশ মনোরঞ্জন করিতে সমর্থ হইব না। এ স্থানের রামািঝরকা বা ঝোরা দ্রষ্টব্য। দশ শত ফুট উচ্চ একটী বৃক্ষ-লতা-সমাকীর্ণ গিরি শেখরে রামঝরকা অবস্থিত । তদুপরি দ্বিতল বৃহৎ ও সুন্দর মন্দির, তন্মধ্যে নিম্নতলস্থ মঞ্চোপরি শ্ৰী রামচন্দ্রের পাদুকা। বিদ্যমান । . . وهنه |