পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৯৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । আমরা হাইদ্রাবাদ দর্শনান্তে গোলকুণ্ড গমন করিলাম। ইহা নিজাম রাজ্যের অন্তভুক্ত একটী নগরের ধ্বংসাবশেষ মাত্র। এ স্থানে অদ্যাপিও গ্রেনাইট পর্বতের তুঙ্গ শিখর দেশে একটী দুর্গ বিরাজিত। এই দুর্গটির অবস্থান বড়ই সুন্দর, সে জন্য ইহা শক্রগণের সম্পূৰ্ণ দুর্ভেদ্য । দুর্গ হইতে প্রায় ৬০০ গজ দূরে প্রাচীন রাজন্যবর্গের নিৰ্ম্মিত বহু অত্যুচ্চ সুন্দর সুন্দর মসজিদ আছে কালের নানাপ্রকার আবৰ্ত্তনের মধ্য দিয়া এখনও এই মসজিদগুলি অক্ষত দেহে বিরাজমান থাকিয়া নিৰ্ম্মাতাগণের গৌরব-গরিমা প্ৰকাশ করিতেছে । হাইদ্রাবাদ হইতে ইহা ৭ মাইল পশ্চিম দিকে অবস্থিত। বাহ্মণী রাজ্যের অধঃপতনের পরে গোলকুণ্ডা। রাজ্য দাক্ষিণাত্যের মধ্যে বিশেষ সমৃদ্ধিশালী ও খ্যাতিমান হইয়া উঠিয়াছিল; কিন্তু মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব ১৬৮৬ খ্ৰীষ্টাব্দে গোলকুণ্ডা। রাজ্য অধিকার করিয়া উহ। স্বীয় সুবিশাল সাম্রাজ্যের অন্তভুক্ত করিয়া লন। এ স্থানে যে সমুদয় সমাধি মন্দির দেখা যায় কেহ কেহ অনুমান করেন যে উহা নিৰ্ম্মাণ করিতে ১৫০০ ০০ ০২, মুদ্রা ব্যয়িত হইয়াছিল। গোলকুণ্ডার দুর্গ বৰ্ত্তমান সময়ে নিজাম রাজের কারাগার ও কোষাগাররূপে ব্যবহৃত হইয়া আসিতেছে । এ স্থানের হীরকের কথা জগদ্বিখ্যাত। আমরা গোলকুণ্ডা দর্শনান্তে পুনরায় হাইদ্রাবাদ ফিরিয়া আসিলাম। এখন হাইদ্রাবাদ সম্বন্ধে আরও কয়েকটা জ্ঞাতব্য বিষয় ব্যক্ত করিয়া আমরা আমাদের এই প্ৰবন্ধ সমাপ্ত করিব। গোলকুণ্ডার দুর্গ দর্শন করিতে হইলে রেসিডেণ্ট আফিস হইতে পাস লওয়া প্ৰয়োজন, নচেৎ দুর্গে প্ৰবেশ করা যায় না । দুর্গের আটটি ফটক ছিল, তন্মধ্যে বৰ্ত্তমান সময়ে কেবল ৪টা ব্যবহৃত হয়, ইহার মধ্যে আবার বানাজারা ফাটকই প্ৰধান প্ৰবেশ দ্বার। দুর্গের পূর্বদিকে নিজাম সাগর নামক একটা সরোবর আছে। পূর্বে এ স্থানে বহু লোকের বসতি ছিল। ফটকের কিছু দূরে নয় মহল নামক নয়টা প্রাসাদ দেখিতে পাওয়া যায়, ইহার চতুর্দিকে প্রাচীর বেষ্টিত। এতদ্ব্যতীত দুর্গের পূর্ব ও দক্ষিণ কোণে বহু ভগ্ন প্ৰাসাদ ও মসজিদের ধ্বংসাবশেষ দেখিতে পাওয়া যায়, এ সকলের প্রাচীন ইতিহাস নির্ণয় করা সুকঠিন। এ সকল ধ্বংসাবশেষের মধ্যে - নকারখানা (সঙ্গীত ভবন) এবং বালা হিসার বা দুর্গ ও জুমা মসজিদ এখনও