পাতা:ভিষক্‌-দর্পণ (ঊনবিংশ খণ্ড).pdf/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মে, ১৯০৯ ] ইচ্ছা বসন্ত রোগের চিকিৎসা । ১৬৭ বিপদ টানিয়া আনে । এইরূপে এক মিনিট কাটিয়া গেলে, পর মিনিট হৃৎপিও আরো দুৰ্ব্বল বৈ সবল হয় না, যকৃত আরো জখম বৈ সবল হয় না, অন্ত্রমধ্যে পচন শীল দ্রব্যের সঞ্চার বৈ নিষ্কাশন হয় না, রোগীর তাবৎ দেহবলের ক্ষয় বৈ আধান হয় না ; প্রতি দণ্ডে পূৰ্ব্ব দণ্ডাপেক্ষ আমাদের রোগীর অহিত বৈ হিতসাধন হয় না .এমনস্থলে, আমরা কি করিব ? কবে ফুসফসে প্রদাহের লক্ষণ স্পষ্ট প্রকাশ পাইবে, বা কবে ত্বকে বসন্তের গুটিকার প্রকাশ পাইবে, আমরা কি সেই অশায় চুপ করিয়া স্থির হইয়া বনিয়া থাকিব ? সাধু ব্যক্তি মাত্রেই বলিবেন—না । তোমার নিউমোনিয়া বা বসন্তের রোগের চিকিৎসা করিবার ইচ্ছা থাকে ত তুমি করিও, প্রাণ ভরিয়া করিও ; কিন্তু তৎপুর্বে “রোগীর” চিকিৎসা করিতে ভুলিও না ; “রোগের” লক্ষণ স্পষ্ট প্রকাশিত হইবার বহুপূৰ্ব্ব হইতেই “রোগী” বিশেষরূপে পীড়িত, তাহার ব্যবস্থা করিও— রোগ চিকিৎসা করিবার আকাজক্ষায় রোগীকে ভুলিও না, আমাদের কাজ রোগীর চিকিৎসা | করা, ছাপমারা রোগের চিকিৎসা করা আমাদের কার্য্য নহে। রোগীকে চিকিৎসা করিবার কালীন তাহার নামাঙ্কিত রোগের চিকিৎসা করিও, তাহাতে কোনও অনিষ্টের অtশঙ্কা নাই । এক্ষণে জিজ্ঞাস্ত, তরুণ ৰাধির স্বত্রপাতের মুখে আমাদের কোন দিকে চিকিৎসা দ্বারা উপকার করিবার ক্ষমতা আছে ? এই প্রশ্নের উত্তর কিয়ৎ পরিমাণে উপরে দিয়াছি । হৃৎপিণ্ডকে সবল রাখা অামাদের কৰ্ত্তব্য ; রক্তকে যথাসম্ভব পরিস্কৃত করিয়া দেওয়া আমাদের উচিত । এতদুভয় কাৰ্য্য কেমন করিয়া করা যায় ? পারাঘটিত বিরেচকের দ্বারা তাবৎ পাকস্থলীকে পরিষ্কৃত করিয়া দেওয়া সৰ্ব্বপ্রথম কৰ্ত্তব্য । তদ্বারা পোর্টাল রক্তও পরিস্কৃত হয় এবং তদ্ধেতু বশতঃ দেহের স্বচ্ছন্দতা অনুভূত হয়। দ্বিতীয়তঃ ঘৰ্ম্মকারক । ঔষধির সাহায্যেও রক্তকে অনেক পরিমাণে পরিষ্কার করা যাইতে পারে। প্রস্রাবকারক ঔষধিও ঐ কার্য্যে অনেকটা সহায় করিতে পারে। (ফুসফুস-প্রদাহ ব্যাধির মত স্থানিক পীড়ার লক্ষণ বর্তমান থাকলে, জলেীকা দ্বারা বিশিষ্ট উপকার সাধিত হইতে পারে ) । প্রচুর পরিমাণে তরল পাণীয় ব্যবহারে বহুল উপকার হয় । নিদ্রীকারক ঔষধি অবাধে ব্যবহৃত হওয়া উচিত, কারণ নিদ্রা অতীব বলাধানকারক। রোগীকে প্রচুর পরিমাণে উন্মুক্ত বায়ু সেবন করান যাইতে পারে। এই যে তালিকাটি দেওয়া গেল, ইহার কোনটি কোন কালে অপকার করিতে পারে ? রোগীর যাহাই ব্যাধি হউক না কেন, আমাদের তাহা অভ্রান্তরূপে জানিবার পুৰ্ব্বে, বহুপূৰ্ব্বে, তাহার আরামের ব্যাঘাত হয়; তখনই রোগী উপকার করিবার প্রকৃত সময় ; তখন হইতেই এই সকল উপায় অবলম্বন করিয়া রোগীর চিকৎসা করিলে অনেক সময়ে তাহার রোগ স্পষ্ট ফুটিতে পায় না, তাদৃশ প্রবল হয় না । এই জন্য বলিতেছিলাম, নামাঙ্কিত রোগ চিকিৎসা করিতে প্রয়াস না পাইয়া রোগীর চিকিৎসায় সকলেরই প্রবৃত্ত হওয়া কৰ্ত্তব্য । এ স্থলে একটি কথা বিশেষ করিয়া বলিয়া রাখি যে এই অবস্থায় ব্র্যাণ্ডি ও ব্রথের বাহুল্য করিলে রোগীর প্রাণনাশেরই বেশী সম্ভাবনা ।