পাতা:ভিষক্‌-দর্পণ (ঊনবিংশ খণ্ড).pdf/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

§ & o ভিষকৃ-দৰ্পণ । [ জুলাই, ১৯০৯ তপোবন দেখিবার মানসে এত আগ্রহ করিয়া আসিলাম, তাহার কিছুই দেখিলাম না । রাম, সীতা, লক্ষ্মণ ত নাই, সে কুঞ্জবন নাই, সে নিঝরিণী নাই, সে পদ্মবন নাই, কেবল কতকগুলা কাল পাথর, বৃক্ষশূন্ত, তৃণশূন্ত পাহাড়। গোদাবরীর মরুসদৃশ শুষ্ক খাত পড়িয়া রহিয়াছে ; বুঝিলাম আলোক চিত্রখানি কোন চিত্র পীঠের ছায়ামাত্র ; সত্য নহে, মিথ্যা, কল্পনা সস্তৃত। তবে তাতে বিশেষ কবিত্ব-মাখা ছিল । মায়ামৃগ অনুসরণ করে রাম যেমন কদাকার একটা রাক্ষস দেখিয়াছিলেন, আমিও সেইরূপ মায়াচিত্রে মুগ্ধ হইয়া রম্য তপোবন দর্শনে আসিয়া বৃক্ষলতা শূন্ত, জীবজন্তু হীন, কৃষ্ণ প্রস্তরময় গোদাবরীর শুষ্ক কঙ্কালমাত্র দেখিলাম স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল, মন দমে গেল, চিত্রধান ফিরাইয়া দিবার ইচ্ছা হইল। তপোবন হইতে ফিরিয়া আসিবার পথে, পূৰ্ব্বে দেখিতে পাই নাই, এখন দেখিলাম, একট ঘনবন ; কাছে গিয়। দেখিলাম দ্রাক্ষাবন ; যে বন দেখিবার জন্ত মনে কত সাধ ছিল সেই বনপাশ্বে আসিয়া উপস্থিত ; ভিতরে প্রবেশ করিলাম। এক একটা লম্ব অবলম্বন আশ্রয় করে ঘন, গুমিল, সরস পত্রে বিভূষিত দ্রাক্ষালতাগুলি জড়াইয়। উঠিয়াছে ; তখন সন্ধ্য হইয়া আসিয়াছে ; নিকটে গিয়া দেখি মুক্তাফলের স্তায় লতায় লতায় কত বড় বড় দ্রাক্ষাগুচ্ছ ঝুলিতেছে, এগাছে ওগাছে সকল গাছেই স্তবকে স্তবকে ফল ঝুলিতেছে। বাগানটী একবিঘা স্থান অধিকার করিয়া আছে। দেখিলাম এখানকার মৃত্তিক অতি সরস ও উৰ্ব্বর, চতুর্দিকে কাল পাথর ছড়ান, শুষ্ক মরু, মধ্যে একটা | সুজলা, সুফলা, শু্যামল ছায়াশীতলা লতাময়ী বনস্থলী দেখিয়া মনে বড় প্রীতি হইল । পূৰ্ব্বে যে ধীর গতির একটা স্রোতস্বিনীর কথা বলিয়াছি তাহারই মায়ায় মরুভূমি এই জীবন-দীপ । বড় আশা হইল—এইবার আঙ্গুরের সাধ মিটাইব ; বন-মালিকে আহবান করিলাম ; সে সসন্ত্রমে উপস্থিত হইল— বলিলাম এই টাকা লও, কয়েক ছুড়ি আঙ্গুর দাও, কিন্তু সে কিছুতেই সন্মত হইল না । বনস্বামীর অনুমতি ব্যতীত সে কেমনে বিক্রয় করিবে । তাহাকে অনেক বুঝাইলাম ; কিন্তু সে বনমালি আমাদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করিতে পারিল না । দ্রাক্ষাগুচ্ছ দর্শনেই দৃষ্টিতৃপ্ত করিয়াই আমাদের ফিরিতে হইল। পকেটে টাকা, গাছে আঙ্গুর, কিন্তু একটাও পাইলাম না ; অগত্যা “ঈশফের” শেয়ালের মতন আমাদিগকে ফিরিতে হইল। তবে নিন্দ করিতে করিতে নয় । সন্ধ্যার সময় ফিরিয়া আমরা ডাকৃধাঙ্গালায় আসিলাম ; কিঞ্চিৎ আহারাদি করিয়া এবার টামে চড়িয়া ষ্টেসনে চলিলাম ; আন ভাড়া ; ছয় মাইল রাস্ত, বিশ ত্রিশজন লোক—অতি ভিড় ; অনেক কষ্টে ষ্টেলনে পৌছিলাম, তখন রাত্রি ১২টা। দ্রাক্ষাবনে গিয়া দ্রাক্ষাশূন্ত হস্তে ফিরিয়া অবশেষে ষ্টেসনে আঙ্গুর পাইলাম। আট আন মেরে কয়েক সের আঙ্গুর কিনিলাম ; মহাতৃষ্ণায় কাতর, আঙ্গুর ও কমলালেবু, খাইয়াও তৃষ্ণ নিবারণ হইল না । ষ্টেসনের জল বরফের ন্তায় ঠাওl—পানে বড়ই তৃপ্তি হইল। নাসিকের জলবায়ু অতি স্বাস্থ্যকর ; এখানে গোরা পণ্টন থাকে ; একটী বিখ্যাত স্বাস্থ্যনিবাস ! শুনিলাম বন্ধে সহব্লকে