পাতা:ভিষক্‌-দর্পণ (প্রথম খণ্ড).pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ե-Հ ভিষক-দৰ্পণ । সেপ্টেম্বর, ১৮৯১ হষ্টতে প্রাস্তান্তর পর্য্যন্ত অনুসন্ধান করিয়া নিবিষ্টচিত্তে পর্য্যবেক্ষণ করা যায়, তাহা হইলে স্পষ্টই পরিলক্ষিত হয় যে, সভ্য সমাজের রমণীগণ, বিশেষতঃ হিন্দু ও মুসলমানের অন্তঃপুরবাসিনী মহিলাগণ কিছু অধিক পরিমাণে লজ্জাশীলা ; এমন কি লজ্জ। রক্ষা করিতে র্তাহারা স্বীয় জীবন বিসজ্জনেও কুষ্ঠিত নহেন । র্তাহারা পীড়িত হইলে, বিশেষতঃ যখন তাহার। স্ত্রীজাতিজ-পীড়ায় আক্রাস্ত হয়েন, তখন পুরুষ-ডাক্তারগণ র্তাহীদের চিকিৎসা করিবে,এবং তাহার, যে লজ্জাকে চিরদিন শিরোভূষণ-স্বরূপ সযত্নে রক্ষা করিয়া আসিতেছিলেন, আজ চিকিৎসার্থে সেই লজ্জায় জলাঞ্জলি দিতে হইবে, এই ভয়ে পীড়ার কথা পুরুষসমাজে, এমন কি প্রাণ-প্রিয়তম স্বামীর সমীপেও প্রকাশ করেন না । এ দিকে অস্তঃসলিলা স্রোতস্বতীর ন্যtয় পীড়া-স্রোত শরীরাভ্যন্তরে প্রবাহিত হইযা ক্রমে ক্রমে শারীরিক তেজস্বিতা নষ্ট করিয়া অচিরেই তাহাদিগকে মৃত্যু-মুখে পাতিত করে । যদি আমাদের দেশে পুরুষ-ডাক্তারের ন্যায় স্ত্রী গণের ডাক্তার হওয়ার প্রথা প্রচলিত থাকিত, তাহা হইলে বোধ হয়, অনেক রমণীকে অকালে কাল-কবলে পতিত হইতে হইত না ; কারণ যদিও রমণীমণ্ডলী লজ্জা-প্রধান, তথাপি র্তাহীদের মধ্যে স্বজাতির নিকট অর্থাৎ স্ত্রী-সাধারণের নিকট র্তাহীদের অপেন আপন শারীরিক অবস্থা ও মনোভাব ব্যক্ত করিতে বিশেষ আপত্তি বা বিঘ্ন দেখিতে পাওয়া যায় না । এক রমণী অপর রমণীর নিকট স্বীয় মনোভাব ব্যক্ত করিতে কোন { প্রকারে লজ্জা বোধ করিয়া কুষ্টিতু হয়েন না । এরূপ স্থলে স্ত্রীগণের পীড়ার চিকিৎসা স্ত্রীগণদ্বারা সম্পন্ন হওয়াই সৰ্ব্বতোভাবে কর্তব্য ও ন্যায়ানুগত । আবার দেখিতে গেলে, রমণীগণের লজ্জা রক্ষিত হইলেই জনসমাজে আমাদের সম্মান রক্ষিত হয় ; পর-পুরুষের ংস্পশে স্ত্রীগণের লজ্জার হানি হয় এবং তৎসহ আমাদের গৌরবও নষ্ট । হইয়। থাকে ; এই জন্যই হিন্দু ও মুসলমান শাস্ত্রকারের পরপুরুষ-সংস্পর্শ রমণীমণ্ডলীর পক্ষে বিশেষ দোষাবহ বলিয়া উক্ত করিয়া গিয়াছেন । কিন্তু যখন আমাদের দেশে স্ত্রীগণের চিকিৎসক হইবার প্রথা প্রচলিত নাই, এবং প্রাণাপেক্ষ প্রিয়তর আর কিছুই নহে, তখন আর গত্যন্তর না দেখিয়া কাজে কাজেই আমরা স্ত্রীগণের লজ্জার ও তৎসহ অামাদের সন্মানের মস্তকে পদক্ষেপপুৰ্ব্বক পুরুষ-ডাক্তারগণ দ্বারা স্বীয় স্ত্রীপরিবারবর্গের চিকিৎসা করাইয়। শাস্ত্রনিষিদ্ধ ও ন্যায়বিগর্হিত কাৰ্য্য করিতে বাধ্য হই । অতএব আমাদের দেশে স্ত্রীগণ মধ্যে ডাক্তার হইবার প্রথা প্রচলিত হইলে আমরা এই সকল निडाँड অসঙ্গত কাৰ্য্য হইতে নিস্তার পাইয়। ন্যায়াসুমত ও শাস্ত্রাঙ্গুমোদিত কাৰ্য্য করিলে তাহাদিগের লজ্জা-রক্ষার পথ নিষ্কন্টক হয়, এবং অনেক রমণীকে বিনা চিকিৎসায় পরিবারবগের লজ্জা ও সম্মান-রক্ষা করিতে গিয়া অকালে কালকবলিত হইতে হয় না। এক্ষণে বোধ হয় সকলেই স্বীকার করিবেন যে, স্ত্রীগণের চিকিৎসার জন্য স্ত্রীচিকিৎসকের নিতান্ত প্রয়োজন। h কাৰ্য্যক্ষেত্রে উপস্থিত হইলে ইহা স্পষ্ট