পাতা:ভীষ্ম - ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় দুকুশষ্ঠ ভীষ্মের কঁক্ষ বিদুর ও ভীষ্ম বিদুর । পিতা । আপনাকে আজ বিষন্ন দেখছি কেন ? ভীষ্ম। বিষন্ন ! বিদুর, বিষন্ন হ’বার ত কারণের অভাব নেই! আমাকে যে তোমরা প্ৰফুল্ল দেখতে পাও, এই আশ্চৰ্য্য। কত বর্ষ কত যুগ চ’লে গেল। পৌরবের কত বংশধর আমার সম্মুখে এল, আবার মিলিয়ে গেল। পিতার দেহত্যাগে চিত্রাঙ্গদকে রাজা ক’রূহুলুম! ভাই আমার গন্ধৰ্বের হাতে প্ৰাণ দিলে। বিচিত্ৰবীৰ্য্যকে রাজা ক’রলুম, সেও যৌবনে পদার্পণ করেই দেহত্যাগ করলে। তার পর তোমরা তিন তিন ভাই । অতি শৈশব থেকে তোমাদেরও পালন ক’রলুম। বিদুর । তার ভিতর থেকে আবার একজন আমার উপর কতকগুলি শিশু পুলের পালনের ভার দিয়ে অকালে দেহত্যাগ করলে। তুমি ত দেখেছ, পঞ্চপাণ্ডব শৈশবে আমাকেই পিতা ব’লে ডাকত ! আমি কত কষ্ট্রে তাদের সে ভ্ৰম ঘুচিয়েছিলুম। সেই পঞ্চপাণ্ডবের বনবাস পৰ্যন্ত আমাকে দেখতে হ’ল। তাদের সঙ্গে বিরাট রাজ্যে যুদ্ধ পৰ্য্যন্ত করতে হ’ল ! বিষন্ন যে হব, তা”তে আর বিচিত্ৰতা কি ? বিদুর । না, পিতা, বিষাদের কথা। আপনি মুখেও আনরেন না । আমাৰু, আশঙ্কা হ’চ্ছে, আপনার মনে ধরণী-ত্যাগের অভিলাষ জেগেছে”। ভীষ্ম। না বাপ, সে আশঙ্কার কোনও কারণ নাই। জীবের মনে মনেও মৃত্যুর কামনা করা পাপ। বিশেষতঃ যে ব্ৰহ্মচারী, তার পক্ষে মৃত্যুকামনা একরূপ ব্ৰহ্ম-হত্যা । আমার মনে মরণের অভিলাষ এক মুহূর্তের জন্যও জাগেনি, তুমি সে বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাক ।