পাতা:ভেক মূষিকের যুদ্ধ.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৵৹

তবে দেশ কালপাত্র ভেদে তাহার কথঞ্চিৎ বিপর্য্যয় হইবার সম্ভাবনা। ললিত নয়নের তুলনায় কোন দেশে ইন্দীবরের, কোন দেশে বা নর্গেসের, কোন দেশে বা নীলবর্ণ ক্ষীণবৃন্ত স্থূল কুসুমান্তরের সাদৃশ্য উল্লেখ হয়, প্রত্যুত, লালিত্যনিলয় নীললোচন দৃষ্টে সকল দেশীয় কবির মনে একই প্রকার ভাবোদয় হয় সন্দেহ নাই, তবে উপমিতি প্রভৃতি অলঙ্কার প্রয়োজক পদার্থ সর্ব্বদেশে একই প্রকার জন্মে না, এই নিমিত্ত কিঞ্চিন্মাত্র বিভেদ সম্ভূত হয়, কিন্তু যে পদার্থ সবদেশেই বর্ত্তমান আছে, তাহা কোন সাদৃশ্য জ্ঞাপক হইলে সর্ব্ব দেশীয় কবিরাই তাহার ব্যবহার করিয়া থাকেন, যথা “মৃগলোচন” এই দৃষ্টান্ত কি ভারতবর্ষীয়, কি পারস্য, কি ইউরোপীয়, ভিন্ন ভিন্ন সকল দেশের কবিরাই স্বীকার করিয়াছেন। অতএব এক দেশের কবির ভাব যে অপর দেশের ভাষায় আকর্ষিত হইবার যোগ্য নহে একথায় আমরা কখনই সম্মত নহি। এতদ্দেশীয় লোকেরা অধুনা ইউরোপীয় ফল, মূল, শাক, শস্যাদি স্বদেশীয় কচি অনুসারে স্বদেশীয় নিয়মে পাক করিয়া গ্রহণ করিতেছেন, তাহতে শরীরের মাত্র পোষণ হয়, কিন্তু ইউরোপীয় অশনে মানসের পোষণও আবশ্যক, এতাবতা, আমাদিগের জিজ্ঞাস্য এই, ইউরোপীয় উপাদেয় মানসিক ভোজ্য, কবিতা প্রভৃতি কি এতদ্দেশীয় জনগণের রুচি অনুসারে এতদ্দেশীয় নিয়মে প্রস্তুত করা যাইতে পারে না?