পাতা:ভেজাল - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করে চলে-খানা ডোবার জন্য টিপে টিপে সাবধানে চালাতে হয় না। গরুরগাড়িগুলি চলাচল করে অন্য পথে। একটু ঘুর হয়, সময় বেশি লাগে, আর কোন অসুবিধা নেই। রামপুর গা থেকে হানাতিয়া ‘আগৈছিল ক্রোশখানেকের পথ, এখন তিন ক্রোশের সামান্য বেশি কি। কম হবে। নগরগড় থেকে সদরের দূরত্ব গরুর, গাড়িতে সাত মাইল বেড়ে গেছে। তবে বিলামসনের বন্ধু স্মিথের কোম্পানী নগরগড় থেকে মালপত্র সদরে নিয়ে যাবার জন্য আট দশটি লরি কাজে লাগিয়ে দেওয়ায় অনেক গাড়ির এখন আর খ্যাটির খ্যাটির করে সদরে যাবার দরকার হয় না । মহীধরের বাড়ির কাছাকাছি নদীর ধারে একটা বিদ্যুত তৈরীর কল বসানো হয়েছে। মহীধরের বাড়িতে ঝাড়বাতি লণ্ঠন আর টানাপাখার পাট গেছে উঠে। ত্ৰিশবছর প্রতি সন্ধ্যায় আলো জ্বালার ভার যে লোকটির ছিল, তাকে ছাড়ানো হয় নি। পাখা টানার এগারটি ছেলেবুড়োর কাজ গেছে। বিদ্যুতের কল বসানো আর চালানোর খরচ উঠেও যাতে কিছু লাভ থাকে। সে ব্যবস্থা বিলামসন করেছে। নগরগড়ের অধিবাসীদের নিজের নিজের কঁচা পাকা বাড়িতে বৈদ্যুতিক আলো জালাতে রাজী করানোর সমস্যাটা তাকে মোটেই কাবু করতে পারে নি। অধোক লোক বুদ্ধিমানের মতো নিজেরাই রাজী হয়েছিল। কাজেই, রাজী করাতে হয়েছিল মোটে বাকী অধোককে। নগরগড়ের যে বাড়িতে সন্ধ্যার পর এক ঘণ্টার মধ্যে বাতি নিভিয়ে সকলে ঘুমিয়ে পড়ত, এখন রাত বারটা পৰ্যন্ত বালুব জ্বালিয়ে সে বাড়িতে সকলে জেগে থাকে । আলো জলুক বা না জালুক, টাকা মাসে মাসে দিতে হবে। আলো না জ্বালিয়ে টাকা দেবার কথা ভাৰতে অনেকের গা জ্বালা করে । তিনটে কারখানাও বিলামসন বসিয়েছে। তার মধ্যে কঁচের। কার