পাতা:ভেজাল - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এখন, মোটে সত্তর বছর বয়সে যৌবনকে নিয়ে কি করতে হয় সে যেন জানে, দেহ যতই উথলে উঠুক মনে নির্মল স্বচ্ছ রসের মতো জীবনের উত্তাপ শুধু আন্তে আস্তে ফোটে। ছাতের শান্ত জ্যোৎস্নায় এক সে আনন্দে পূর্ণ হয়ে যায়, মনে হয় জন্ম থেকে বড়লোকের আদুরে মেয়ের মতো সে ভগবানের আদুরে মেয়ে হয়ে আছে, কোনো অভাব তার নেই, কোনো ভাবনা নেই। আবেগ অদম্য হলে হাঁটু পেতে বসে হাতে মাথা ঠেকিয়ে সে অনেকক্ষণ ভগবানকে প্ৰণাম করে, ভক্তি আর ভালোবাসার কত মানুষ যে বিরাট মহান রূপ নিয়ে চোখের সামনে দিয়ে তেসে যায়, —তার দাদার একবছরের শিশুটি পর্যন্ত আকাশ পাতাল জুড়ে কোমল চামড়ার দু্যতিতে চারিদিক নীলাভ করে তোলে, দুটি দাতের ফোকলা মুখে তার দিকে চেয়ে শুধু হাসে । এই অবস্থায় বাড়ির লোকে তাকে মাঝে মাঝে আবিষ্কার করে। ডাকলেই সে ধীরে ধীরে উঠে বসে বলে, ‘মাগো, কি প্রকাও একটা আগুন আকাশ দিয়ে চলে গেল।” . মা আর মায়ের সম্পকিত মাসি বলেন, “আইবুড়ো মেয়ে, এসময় তোর ছাতে উঠবার দরকার ‘’ ৷ দাদা ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করে বলেন, “ওটা হল ধূমকেতু । শূন্য থেকে পৃথিবীর বাতাসে এলে জলে উঠে । ওসব দেখে ভয় পাসনি মিগু।” “ভয় পাব কেন ?” যতীন শোবার ঘরে গম্ভীর মুখে চেয়ারে বসে চুরুট টানছিল, প্ৰায় নিঃশব্দে বলল, “বোস মিণ্ড ।” বসবার চেয়ারটাও সে দেখিয়ে দিল, পাঁচ সাত হাত তফাতে। মৃগনয়ন হেসে তার চেয়ারের হাতলে বসে বললে, “তোমার যে কি এক বাতির্ক। আগে দূরে চেয়ারে বলে নানা ছলে একটু একটু করে কাছে 卤°