পাতা:ভেজাল - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দাতটি ভেঙেছিল ভুষণ, তারপর সোনা দিয়ে বাঁধিয়ে দিয়েছে। তেল চপচপে একরাশি চুল দিয়ে মাথার পিছনে সে গোল চাকার মতো প্ৰকাণ্ড চ্যাপটা খোপা বেঁধেছে। সুগঠিত দেহ একটু শিথিল হয়ে আসায় অপরিমিত যৌবন ভাটা ধরা জোয়ারের মতো অস্বাভাবিক স্পষ্টতায় থমথম করছে। প্ৰসাদ কাঠ হয়ে দাড়িয়ে থাকে। আশা এই-- রকম সুরু করলে শরীরটা তার শক্ত হয়ে যায়। রাস্তার মোড়ে বসাকদের মন্দির। সামনে দিয়ে যাবার সময় রাস্তায় দাড়িয়ে মন্দিরের মানুষ-সমান উচু চত্বরে মাথা ঠেকিয়ে প্রসাদ প্রার্থনা জানাল, আজ যেন ঝড় না। ওঠে, আর-আর, তারা যেন श्वडि, श्न। আশার সুমতি হোক এই প্রার্থনা জানাবার ভরসা তার হয় না, আশার মনে পাপ আছে মনে করলেও তারই পাপ হবে। আশা ভূষণের স্ত্রী, আশা গুরুজন । বাপের বাড়ি থেকে ফিরে এলে পায়ে হাত দিয়ে আশাকে সে প্ৰণাম করেছিল । আশা কঁচা আম মাখছিল, থুতনি ধরে নেড়ে দেবার সময় ঠোটে আঙুল ঘষে গিয়েছে। চলতে চলতে প্ৰসাদ ঝাল নুন-তেলের স্বাদ অনুভব করতে থাকে। দুঃখে ক্ষোভে চোখে তার জল এসে পড়ার উপক্রম হয় । এ-বিপদ ঠেকানো যাবে না, ঠেকানো অসম্ভব। সুমতি না ছাই জাগবে তার, আশা কাছে এসে দাড়ালে ভাববার ক্ষমতা পর্যন্ত তার লোপ পেয়ে যায়। দুটি হাত দিয়ে আশা তার গলা জড়িয়ে ধরেছে কল্পনা করতে গেলেই তার সর্বাঙ্গ যেন অবশ হয়ে আসে, সত্য সত্যই আশা যেদিন তাকে জড়িয়ে ধরবে সেদিন নিজেকে বঁাচাবার ক্ষমতা সে পাবে কোথায় ? • আশা যে কেন এমন হয়ে গেল কে জানে। মাঝখানে একবার প্রসাদের নিরুত্তেজ উৎসাহহীন জীবনে একটু সাড়া এসেছিল। সখা হয়েছিল, N