পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
১০৭

নগরে যাই নাই; অধিরাজ বাহাদুর নিজে এবং নগরের যে সকল লোক আমায় জানেন, সকলেই এ বিষয়ে সাক্ষ্য দিবেন; আমি আপনকার সঙ্গে প্রবঞ্চনা করিতেছি না। তখন অধিরাজ কহিলেন, সোমদত্ত! চিরঞ্জীব বিংশতি বৎসর আমার নিকটে রহিয়াছে; এই বিংশতি বৎসরের মধ্যে, ও যে কখনও হেমকূট নগরে যায় নাই, আমি তাহার সাক্ষী। আমি স্পষ্ট বুঝিতেছি, শোকে, ও দুর্ভাবনায়, ও প্রাণদণ্ডভয়ে তোমার বুদ্ধিভ্রংশ ঘটিয়াছে, তাহাতেই তুমি এই সমস্ত অসম্বদ্ধ কথা বলিতেছ। সোমদত্ত নিতান্ত নিরুপায় ভাবিয়া নিরস্ত হইলেন, এবং দীর্ঘ নিশ্বাস পরিত্যাগ পূর্ব্বক অধোবদনে মৌনাবলম্বন করিয়া রহিলেন।

 এই সময়ে, দেবালয়ের কর্ত্রী, হেমকূটবাসী চিরঞ্জীব ও কিঙ্করকে সমভিব্যাহারে করিয়া, অধিরাজের সম্মুখবর্ত্তীনী হইলেন, এবং বহুমান পুরঃসর সম্ভাষণ করিয়া কহিলেন, মহারাজ! এই দুই বৈদেশিক ব্যক্তির উপর যথেষ্ট অত্যাচার হইয়াছে, আপনাকে তাহার বিচার করিতে হইবেক। ভাগ্যক্রমে, ইঁহারা দেবালয়ে প্রবেশ করিয়াছিলেন; নতুবা, ইঁহাদের প্রাণহানি পর্য্য়ন্ত ঘটিতে পারিত।

 এক কালে দুই চিরঞ্জীব ও দুই কিঙ্কর অবলোকনমাত্র, সমবেত ব্যক্তিবর্গ বিস্ময়সাগরে মগ্ন হইয়া অবিচলিত নয়নে নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। চন্দ্রপ্রভা, দুই স্বামী উপস্থিত দেখিয়া, হতবুদ্ধি হইয়া রহিলেন। হেমকূটবাসী চিরঞ্জীব সোমদত্তকে দেখিবামাত্র চিনিতে পারিলেন, এবং তদীয় দুরবস্থা