পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
১০৯

শ্রবণ করিয়া, সোমদত্তের হৃদয়কন্দর অনির্ব্বচনীয় আনন্দসলিলে উচ্ছলিত হইয়াছিল; এক্ষণে আবার লাবণ্যময়ীর উদ্দেশ পাইয়া, যেন তিনি অমৃতসাগরে অবগাহন করিলেন এবং বাষ্পাকুল লোচনে গদগদ বচনে কহিলেন, প্রিয়ে! আমি যেরূপ হতভাগ্য, তাহাতে পুনরায় তোমার ও চিরঞ্জীবের মুখ নিরীক্ষণ করিব, কোনও রূপে সম্ভব নহে। তোমাদিগকে প্রত্যক্ষ করিতেছি বটে, কিন্তু তুমি যে বাস্তবিক লাবণ্যময়ী, আর ও যে বাস্তবিক চিরঞ্জীব, এখনও আমার সে বিশ্বাস হইতেছে না। বলিতে কি, আমি এই সমস্ত স্বপ্নদর্শনবৎ বোধ করিতেছি। যাহা হউক, যদি তুমি যথার্থই লাবণ্যময়ী হও, আমায় বল; যে পুত্রটির সহিত এক গুণবৃক্ষে বদ্ধ হইয়া সমুদ্রে ভাসিয়াছিলে, সে কোথায় গেল, সে কি অদ্যাপি জীবিত আছে। এই কথা শ্রবণমাত্র লাবণ্যময়ীর নয়নযুগল হইতে প্রবল বেগে বাষ্পবারি বিগলিত হইতে লাগিল। কিয়ৎ ক্ষণ পর্য্য়ন্ত তাহার বাক্যনিঃসরণ হইল না। পরে, কিঞ্চিৎ অংশে শোকাবেগ সংবরণ করিয়া, তিনি নিরতিশয় করুণ স্বরে কহিলেন, নাথ! তোমার কথা শুনিয়া, আমার চিরপ্রসুপ্ত শোকসাগর উথলিয়া উঠিল। তোমার জিজ্ঞাসার উত্তর দিতে আমার হৃদয় বিদীর্ণ হইতেছে। আমরা তীরে উত্তীর্ণ হইলে পর, কর্ণপুরের লোকেরা চিরঞ্জীব ও কিঙ্করকে লইয়া পলায়ন করিল। আমি তোমার ও তনয়দিগের শোকে, একান্ত বিকলচিত্ত হইয়া, অহোরাত্র হাহাকার করিয়া, পথে পথে কঁদিয়া বেড়াইতে লাগিলাম। কিয়ৎ কাল অতীত হইলে, কিঞ্চিৎ অংশে শোক