পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১০
ভ্রান্তিবিলাস।

সংবরণ করিয়া, তোমাদের অন্বেষণে নির্গত হইলাম। কত কষ্টে কত দেশ পর্য্য়টন করিলাম, কিন্তু কোনও স্থানে কোনও সন্ধান পাইলাম না। পরিশেষে, তোমাদের পুনর্দর্শন বিষয়ে সম্পূর্ণ নিরাশ্বাস হইয়া, স্থির করিলাম, আমার প্রাণ ধারণের প্রয়োজন নাই। এত ক্লেশে অসার দেহভার বহন করা বিড়ম্বনামাত্র; অতএব, আত্মঘাতিনী হই, তাহা হইলে, এক কালে সকল ক্লেশের অবসান হয়। পরে, আত্মঘাতিনী হওয়া সর্ব্বথা অনুচিত বিবেচনা করিয়া, জীবনের অবশিষ্ট ভাগ তপস্যা ও দেবকার্য্যে নিয়োজিত করাই সৎপরামর্শ বলিয়া অবধারিত করিলাম। অবশেষে, জয়স্থলে আসিয়া, এই দেবালয়ে প্রবিষ্ট হইয়া, তপস্বিনীভাবে কালহরণ করিতেছি। জ্যেষ্ঠ চিরঞ্জীব ও তাহার সহচর কিঙ্কর অদ্যাপি জীবিত আছে কি না, আর যদিই জীবিত থাকে, কোথায় আছে, কিছুই বলিতে পারি না। অনন্তর, লাবণ্যময়ী ও সোমদত্ত উভয়ে নিষ্পন্দ নয়নে পরস্পর মুখ নিরীক্ষণ ও প্রভূত বাষ্পবারি বিসর্জন করিতে লাগিলেন।

 দুই চিরঞ্জীব ও দুই কিঙ্কর সমবেত দেখিয়া, অধিরাজ বাহাদুরও, কিছুই নির্ণয় করিতে না পারিয়া, সন্দিহান চিত্তে কত কল্পনা করিতেছিলেন, এক্ষণে লাবণ্যময়ী ও সোমদত্তের আলাপ শ্রবণে, সর্ব্বাংশে ছিন্নসংশয় হইয়া, সহাস্য বদনে কহিলেন, সোমদত্ত! তুমি প্রাতঃকালে যে আত্মবৃত্তান্ত বর্ণন করিয়াছিলে, তাহার অনেক অংশে আমার বিলক্ষণ সংশয় ছিল; কিন্তু এক্ষণে, তোমাদের স্ত্রীপুরুষের কথোপকথন শুনিয়া, সকল