পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
ভ্রান্তিবিলাস।

কহিল, আপনি প্রহার করিয়া এখান হইতে তাড়াইবেন, তিনি প্রহার করিয়া সেখান হইতে তাড়াইবেন; আমার উভয় সঙ্কট, কোনও দিকেই নিস্তার নাই।

 এই বলিয়া সে চলিয়া গেলে পর, চন্দ্রপ্রভা ঈর্য্যাকষায়িত লোচনে সরোষ বচনে কহিতে লাগিলেন, বিলাসিনি! তোমার ভগিনীপতির কথা শুনিলে। এত ক্ষণ আমায় কত বুঝাইতেছিলে, এখন কি বল। শুনিলে ত, তাঁহার বাটী নাই, তাঁহার স্ত্রী নাই, তিনি বিবাহ করেন নাই। আমি কিঙ্করকে পাঠাইয়াছিলাম, অকারণে তাহাকে প্রহার করা আমার উপর অবজ্ঞা প্রদর্শন মাত্র। আমি ইদানীং তাহার চক্ষের শূল হইয়াছি। আমরা তাঁহার প্রতীক্ষায় এত বেলা পর্য্যন্ত অনাহারে রহিয়াছি, তিনি অন্যত্র আমোদ আহ্বাদে কাল কাটাইতেছেন। তুমি যা বল, এখন তাঁর উপর আমার বিলক্ষণ সন্দেহ হয়। আমি তার নিকট কি অপরাধে অপরাধিনী হইয়াছি, বলিতে পারি না। আমি কিছু তত রূপহীন বা গুণহীন নই যে, তিনি আমায় এত ঘৃণা করিতে পারেন। অথবা কার দোষ দিব, সকলই আমার অদৃষ্ট্রের দোষ।

 ভগিনীর ভাব দর্শন করিয়া, বিলাসিনী কহিলেন, দিদি! ঈর্ষ্যা স্ত্রীলোকের অতি বিষম শত্রু; ঈর্ষ্যার বশবর্ত্তিনী হইলে, স্ত্রীজাতিকে যাবজ্জীবন দুঃখভাগিনী হইতে হয়; অতএব এরূপ শক্রকে অন্তঃকরণ হইতে একবারে অপসারিত কর। এই কথা শুনিয়া, যার পর নাই বিরক্ত হইয়া, চন্দ্র প্রভা কহিলেন,