পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
২৯

বিলাসিনি! ক্ষমা কর, আর তোমার আমায় বুঝাইতে হইবেক না; এত অত্যাচার সহ করা আমার কর্ম্ম নয়। আমি তত নিরভিমান হইতে পারিব না যে, তাহার এরূপ আচরণ দেখিয়াও, আমার মনে অসুখ জন্মিবেক ন। ভাল, বল দেখি; যদি আমার প্রতি পূর্ব্বের মত অনুরাগ থাকিত, তিনি কি এত ক্ষণ গৃহে আসিতেন না; না, অকারণে কিঙ্করকে প্রহার করিয়া বিদায় করিতেন। তুমি ত জান, আজ কত দিন হইল, আমায় এক ছড়া হার গড়াইয়া দিবেন, বলিয়াছিলেন; সেই অবধি আর কখনও তাঁহার মুখে হারের কথা শুনিয়াছ। বলিতে কি, এত হতাদর হইয়া বাঁচা অপেক্ষা মরা ভাল। যেরূপ হইয়াছে, এবং উত্তরোত্তর যেরূপ হইবেক, তাহাতে আমার অদৃষ্টে কত কষ্টভোগ আছে, বলিতে পারি না।

 হেমকুটের চিরঞ্জীব, আকুল হৃদয়ে পান্থনিবাসে উপস্থিত হইয়া, তথাকার অধ্যক্ষকে কিঙ্করের কথা জিজ্ঞাসা করিলেন, তিনি কহিলেন, প্রায় চরি দণ্ড হইল, সে এখানে আসিয়াছে। এবং আপনি তাহার হস্তে যে স্বর্ণমুদ্রা দিয়াছিলেন, তাহা সিন্ধুকে বন্ধ করিয়া রাখিয়াছে। পরে, অনেক ক্ষণ প্রতীক্ষা করিয়া, বিলম্ব দেখিয়া, সে এইমাত্র আপনকার অন্বেষণে গেল। এই কথা শুনিয়া, সংশয়ারূঢ় হইয়া, চিরঞ্জীব মনে মনে কহিতে লাগিলেন, অধ্যক্ষ যেরূপ বলিলেন, তাহাতে আমি স্বর্ণমুদ্রা সহিত কিঙ্করকে আপণ হইতে বিদায় করিলে পর, তাহার সহিত আমার আর সাক্ষাৎ বা কথোপকথন হওয়া সম্ভব নহে।