পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
৩৫

আমার বাটী নাই, আমার স্ত্রী নাই। এখন আবার, যেন কিছুই জান না, এইরূপ ভান করিতেছ। চিরঞ্জীব শুনিয়া, ঈষৎ কুপিত হইয়া, কিঙ্করকে জিজ্ঞাসিলেন, তুমি কি এই স্ত্রীলোকের সহিত কথোপকথন করিয়াছিলে। সে কহিল, না মহাশয়! আমি উহার সঙ্গে কখন কথা কহিলাম; কথা কহা দূরে থাকুক, ইহার পূর্ব্বে আমি উহারে কখনও দেখি নাই। চিরঞ্জীব কহিলেন, দুরাত্মন্‌! তুমি মিথ্যা বলিতেছ; উনি যে সকল কথা বলিতেছেন, তুমি আপণে গিয়া আমার নিকট অবিকল ঐ কথাগুলি বলিয়াছিলে। সে কহিল, না মহাশয়। আমি কখনও বলি নাই; জন্মাবচ্ছিন্নে আমি উঁহার সহিত কথা কই নাই। চিরঞ্জীব কহিলেন, তোমার সঙ্গে যদি দেখা ও কথা না হইবে, উনি কেমন করিয়া আমাদের নাম জানিলেন।

 হেমকূটবাসী চিরঞ্জীবের ও কিঙ্করের কথোপকথন শুনিয়া, চন্দ্রপ্রভা যৎপরোনাস্তি ক্ষুব্ধ হইলেন, এবং চিরঞ্জীবকে, স্বীয় পতি জয়স্থলবাসী চিরঞ্জীব জ্ঞানে সম্ভাষণ করিয়া, আক্ষেপ বচনে কহিতে লাগিলেন, নাথ! যদিই আমার উপর বিরাগ জন্মিয়া থাকে, চাকরের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করিয়া, এরূপে অপমান করা উচিত নহে। আমি কি অপরাধ করিয়াছি যে এরূপ ছল করিয়া আমার এত লাঞ্ছনা করিতেছ। তুমি কখনই আমায় পরিত্যাগ করিতে পারিবে না। তুমি যা ভাব না কেন, আমি তোম। বই আর জানি না; যাবৎ এ দেহে প্রাণ থাকিবেক, তাবৎ আমি তোমার বই আর কারও নই। আমি জীবিত