পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
ভ্রান্তিবিলাস।

গৃহে লইয়া চলিলেন। চিরঞ্জীব, অয়স্কান্তে আকৃষ্ট লৌহের ন্যায়, নিতান্ত অনায়ত্ত হইয়া, আপত্তি বা অনিচ্ছাপ্রদর্শন করিতে পারিলেন না। কিয়ৎ ক্ষণ পরে, বাটীতে উপস্থিত হইয়া, চন্দ্রপ্রভা কিরুকে কহিলেন, দ্বার রুদ্ধ করিয়া রাখ, যদি কেহ তোমার প্রভুর অনুসন্ধান করে, বলিবে, আজ তাহার সঙ্গে সাক্ষাৎ হইবে না; এবং যে কেন হউক না, কাহাকেও কোনও কারণে বাটীতে প্রবেশ করিতে দিবে না। অনন্তর, চিরঞ্জীবকে কহিলেন, নাথ! আজ আমি তোমায় আর বাড়ীর বাহির হইতে দিব না; তোমার সঙ্গে অনেক কথা আছে। চিরঞ্জীব, দেখিয়া শুনিয়া হতবুদ্ধি হইয়া, মনে মনে কহিতে লাগিলেন, আজ আমার অদৃষ্টে এ কি ঘটিল। আমি পৃথিবীতে আছি, কি স্বর্গে রহিয়াছি; নিদ্রিত আছি, কি জাগরিত রহিয়াছি; প্রকৃতিস্থ আছি, কি উন্মাদগ্রস্ত হইয়াছি; কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না। এক্ষণে কি করি; অথবা ইহাদের অভিপ্রায়ের অনুবর্ত্তী হইয়া চলি, ভাগ্য যাহা আছে, তাহাই ঘটিবেক। তাহাকে বাটীর অভ্যন্তরে যাইতে দেখিয়া, কিঙ্কর কহিল, মহাশয়! আমি কি দ্বারদেশে বসিয়া থাকিব। চিরঞ্জীব কোনও উত্তর দিলেন না। চন্দ্রপ্রভা কহিলেন, দেখিও যেন কেহ বাটীতে প্রবেশ করিতে না পায়। ইহার অন্যথা হইলে, আমি তোমার যৎপরোনাস্তি শাস্তি করিব। এই বলিয়া, চিরঞ্জীবকে লইয়া তিনি অভ্যন্তরে প্রবেশ করিলেন।