পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
৫১

এই বলিয়া, বিলাসিনী সেখান হইতে চলিয়া গেলেন। হেমকুটের চিরঞ্জীব, হতবুদ্ধি হইয়া, একাকী সেই স্থানে বসিয়া ভাবিতে লাগিলেন।

 এই সময়ে, হেমকূটবাসী কিঙ্কর, উৰ্দ্ধশ্বাসে দৌড়িয়া, চিরজীবের নিকটে উপস্থিত হইল, এবং আকুল বচনে কহিতে লাগিল, মহাশয়! আমি বড় বিপদে পড়িয়াছি; রক্ষা করুন। চিরঞ্জীব কহিলেন, ব্যাপার কি বল। সে কহিল, এ বাটীর কর্ত্রী ঠাকুরাণী যেরূপ, পরিচারিণীগুলিও অবিকল সেই রূপ চরিত্রের লোক; কর্ত্রী ঠাকুরাণী যেমন আপনাকে পতি বলিয়া অধিকার করিতে চাহেন, পাকশালায় যে পরিচারিণী আছে, সে আমাকে সেইরূপ অধিকার করিতে চাহে। সে আমার নাম জানে, আমার শরীরের কোন স্থানে কি চিহ্ন আছে, সমুদয় জানে। সে কিরূপে এ সমস্ত জানিতে পারিল, ভাবিয়া কিছুই স্থির করিতে পারিতেছি না। সে সহসা আমার নিকটে উপস্থিত হইল, এবং প্রণয়সম্ভাষণ পূর্ব্বক কহিল, এখানে একাকী বসিয়া কি করিতেছ; পাকশালায় আইস, আমোদ আহ্লাদ করিব। সে এই বলিয়া, আমার হস্তে ধরিয়া, টানাটানি করিতে লাগিল। তাহার আকার প্রকার দেখিয়া, আমার মনে এমন ভয় জন্মিল যে আমি কোনও ক্রমে তাহার প্রস্তাবে সম্মত হইলাম না। সে যেমন বিশ্রী, তেমনই স্থূলকায় ও দীর্ঘাকার। আমি আপনকার সঙ্গে অনেক দেশ বেড়াইয়াছি, কিন্তু কখনও এমন ভয়ানক মূর্ত্তি দেখি নাই; আমার বোধ হয়, সে রাক্ষসী, মানুষী নয়। আমি