পাতা:মতিয়া বিবি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মতিয়া বিবি।
২১

দ্বারা যে যে বাক্স প্রভৃতি খুলিতে পারিলাম, তাহা খুলিয়া ফেলিলাম; আর যাহা খুলিতে পারিলাম না; তাহা ভাঙ্গিয়া ফেলিলাম। ঐ সকল বাক্সের আভ্যন্তরীণ অবস্থা দেখিয়া বেশ বুঝিতে পারিলাম যে, ঐ সকল বাক্স দস্যু কর্ত্তৃক খোলা হইয়াছিল, কিন্তু উহার মধ্যস্থিত বস্ত্র প্রভৃতি যে কিছু অপহৃত হইয়াছে, তাহা রোধ হইল না, কিন্তু কোনটীর ভিতর অর্থ বা কোনরূপ অলঙ্কার দৃষ্টিগোচর হইল না। তারামণি ঐ সকল বাক্স ও সিন্দুক প্রভৃতির ভিতর যদি কোনরূপ অলঙ্কার বা নগদ অর্থ রাখিয়া থাকে, তাহার সমস্তই অপহৃত হইয়াছে।

 পাড়ার অনেকেই কহিল, তারামণির অঙ্গে বালা, তাগা, হার প্রভৃতি কয়েকখানি সুবর্ণনির্ম্মিত অলঙ্কার প্রায়ই থাকিত। কিন্তু মৃতদেহের শরীরে অলঙ্কারের কোনরূপ চিহ্ণ না দেখিয়া সহজেই অনুমান করিতে হইল যে, তারামণিকে হত্যা করিবার কারণ আর কিছুই নহে, কেবল তাহার যথাসর্ব্বস্ব অপহরণ করা। আরও মনে করিলাম, হয়তো এই কার্য্য তারামণির কোন পরিচিত লোকের দ্বারা হইয়া থাকিবে। তারামণির দ্রব্যাদি কেবলমাত্র অপহরণ করিয়া চলিয়া গেলে, পশ্চাৎ তারামণি তাহাদিগের নাম বলিয়া দেয়, এই ভয়েই তাহারা তারামণিকে হত্যা করিয়া গিয়াছে। এবং যাহাতে সহজে এ কথা প্রকাশিত হইয়া না পড়ে, এই নিমিত্ত তাহারা তারামণির মৃতদেহ লোহার সিন্দুকে বন্ধ করিয়া রাখিয়া গিয়াছে। তাহারা ভাবিয়াছিল, চাবি না পাইলে ঐ সিন্দুক সহজে কেহ খুলিবে না, সুতরাং তারামণির অবস্থাও কেহ অবগত হইতে পারিবে না।