কর্ম্মচারী উভয়েই মৃতদেহের এইরূপ হঠাৎ অন্তর্ধান দেখিয়া, বিশেষরূপ চিন্তিত ও আশ্চর্য্যান্বিত হইলেন। নিতান্ত অল্প সময়ের মধ্যে এইরপে যে একটা মনুষ্যের মৃতদেহ অন্তর্হিত হইয়া গেল, ইহা বড়ই আশ্চর্য্য। শৃগাল কুক্কুরে সহজে যে ঐ মৃতদেহ স্থানান্তরিত করিতে পারিবে, তাহাও বোধ হয় না। মৃতদেহের এইরূপ অদ্ভূত অন্তর্ধানের কথা তিনি আর গোপন রাখিতে পারিলেন না। এই সংবাদ তখন তাঁহার উর্দ্ধতন কর্ম্মচারীর নিকট প্রেরণ করিতে হইল। উর্দ্ধতন কর্মচারীর আদেশ অনুযায়ী আরও কয়েকজন কর্ম্মচারী আসিয়া এই অনুসন্ধানে যোগদান করিলেন। কেহ মতিয়া বিবির মৃতদেহের অনুসন্ধান করিয়া বেড়াইতে লাগিলেন, কেহ বা অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন, ঐ মতিয়া বিবি কে, কাহার স্ত্রী, বাসস্থান কোথায় ও তাহার মৃত্যুর কারণই বা কি? মসলিম মতিয়া বিবিকে তাহার স্ত্রী পরিচয়ে কবরস্থানে লইয়া গিয়াছিল। এখনও সে তাহাকে আপন স্ত্রী বলিয়া পরিচয় প্রদান করিতে লাগিল, কিন্তু তাহাদিগের প্রকৃত থাকিবার স্থান যে কোথায়, তাহা কিন্তু কাহাকেও কহিল না বা দেখাইল না। একস্থানের একটী খালি ঘর দেখাইয়া দিয়া কহিল, ঐ স্থানে তাহারা বাস করিত; কিন্তু ঐ ঘরের মধ্যে বাসোপযোগী কোনও দ্রব্যই পরিলক্ষিত হইল না, বা নিকটবর্ত্তী কোনও ব্যক্তিই বলিতে পারিল না যে, তাহারা ঐ স্থানে বাস করিত।
পাতা:মতিয়া বিবি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৪
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
দারোগার দপ্তর, ১৩৩ সংখ্যা।