পাতা:মতিয়া বিবি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
দারোগার দপ্তর, ১৩৩ সংখ্যা।

অপর একব্যক্তি কহিল, তাহার নাম মহম্মদ কাছেম। মসলিমকে জিজ্ঞাসা করায় সে যে কখনও কেশব কৈবর্ত্তের বাটীতে বাস করিয়াছিল, তাহা স্বীকার করিল না। হানিফ ও কাছেম্‌, কেশবের বাড়ীতে যাওয়া বা সেই স্থানে মসলিম বা তাহার বন্ধুর সহিত সাক্ষাৎ করা, একবারে অস্বীকার করিল। কেশব কৈবর্ত্ত যদি উহাদিগকে ঠিক চিনিতে পারিয়াই না থাকে, এই ভাবিয়া উহাদিগকে সঙ্গে লইয় কেশব কৈবর্ত্তের বাড়ীতে গমন করিলাম। সেই স্থানে কেশবের স্ত্রী ও পাড়ার অপরাপর যেসকল লৌক উহাদিগকে সেই স্থানে দেখিয়াছিল, তাহারা সকলেই একবাক্যে উহাদিগকে সনাক্ত করিল; এখন আর আমাদিগের মনে কিছু মাত্র সন্দেহ রহিল না। এখন বেশ বুঝিতে পারিলাম যে, মহম্মদ মসলিম তাহার জনৈক পারিষদের সহিত ঐ স্থানে বাস করিয়াছিল ও ছানিফ ও কাছেম উহাদিগের নিকট সেই স্থানে আগমন করিত। আর বুঝিতে পারিলাম যে, তারামণি ইহাদিগের কর্ত্তৃকই হত হইয়াছে ও ইহারাঁই তাহার যথা-সর্ব্বস্ব অপহরণ করিয়া লইয়া, তাহার মৃতদেহ লোহার সিন্দুকে বন্ধ করিয়া সেই স্থান হইতে প্রস্থান করিয়াছে।

 মনে মনে আমরা এই অনুমান করিলাম সত্য, কিন্তু কিরূপে উহাদিগের উপর এই ঘটনা প্রমাণিত করিতে সমর্থ হইব, সেই চিন্তা আসিয়া তখন উপস্থিত হইল। যে সকল কর্ম্মচারী তারামণির হত্যাকাণ্ডের অনুসন্ধান করিতেছিলেন, ও যে সকল কর্ম্মচারী মতিয়া বিবির মৃতদেহের অদ্ভূত অন্তর্ধানের অনুসন্ধানে লিপ্ত ছিলেন, এখন তাহারা সকলে একত্রে মিলিত হইয়া উভয় অনুসন্ধান সম্পন্ন করিতে প্রবৃত্ত হইলেন।