পাতা:মতিয়া বিবি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগাপ দপ্তর, ১৩৩ সংখ্যা।

 আগন্তুক। যে ঘরে সিঁদ হইয়াছে, তারামণি সেই ঘরে শয়ন করিত। তাহার ঘরের দরজা ভিতর হইতে বন্ধ আছে; কিন্তু অনেক ডাকাডাকি করিয়া তারামণির কোনরূপ উত্তর না পাইয়া, আমিই আপনাকে সংবাদ দিতে আসিয়াছি।

 আমি। সিঁদটী আপনি স্বচক্ষে দেখিয়াছেন কি? ঐ ঘরের কোন্ স্থানে ও কি প্রকার সিঁদ?

 আগন্তুক। যে ঘরে তারামণি শয়ন করেন, সেই ঘরের পশ্চাৎ দিকের দেওয়ালের মাটি কাটিয়া এক প্রকাণ্ড সিঁদ দিয়াছে। ঐ সিঁদ আমি স্বচক্ষে দেখিয়া আসিয়াছি।

 সংবাদদাতার এই কথা শুনিয়া সেই সময় আমার মনে যে কিরূপ চিন্তা আসিয়া উপস্থিত হইল, তাহা পাঠকগণ কিছুমাত্র অনুমান করিয়া উঠিতে পারিতেছেন কি? আমার মনে হইল, চোরে সিঁদ দিয়া কেবলমাত্র তারামণির মূল্যবান দ্রব্যাদি অপহরণ করিয়া লইয়া যায় নাই, সেই সঙ্গে তারামণিকেও শমন-সদনে প্রেরণ করিয়া গিয়াছে। নতুবা যে ঘরে তারামণি শয়ন করিয়াছিল, যে ঘরের দরজা তারামণি ভিতর হইতে বদ্ধ করিয়া রাখিয়া দিয়াছিল, সেই ঘরেই সিঁদ হইয়াছে, অথচ এখন পর্য্যন্ত তারামণির কোনরূপ সন্ধান নাই কেন? কিন্তু ঘরের দরজা তারামণি যেরূপ ভাবে ভিতর হইতে বদ্ধ করিয়া শয়ন করিয়াছিল, ঠিক সেইরূপ ভাবেই ভিতর হইতে বদ্ধ আছে। ঘরের ভিতর প্রবেশ করিলেই দেখিতে পাইব, হয় তারামণি তাহার বিছানার উপর, না হয় ঘরের মেজের উপর মৃত অবস্থায় পড়িয়া আছে।

 মনে মনে এইরূপ ভাবিয়া, আর কালবিলম্ব করিলাম না।