ফ্যানী চার্লসের হস্ত হইতে হস্ত মুক্ত করিয়া লইয়া মৃদুস্বরে কহিল —“না।” চমকিয়া চার্লস ফ্যানীর হাত ছাড়িয়া দিয়া তাহার মুখের পানে তাকাইয়া বলিল—“যাবে না? আমায় চাও না?”
ফ্যানী দৃঢ়তার সহিত উত্তর দিল, “না মিষ্টার ফষ্টার। আমার হৃদয় তোমাকেই দিয়েছি; কিন্তু এ তুচ্ছ দেহটা দিতে পার্বনা। আমার এ কৃতঘ্নতা আমার বৃদ্ধ শোকজর্জ্জরিত পিতাকে হত্যা ক’রে ফেল্বে। আমি তাঁর পৃথিবীর একমাত্র সম্বল।”
“সেইজন্য বুঝি তিনি তোমায় অর্দ্ধমূল্যে যষ্টিবৎসরের বৃদ্ধের হস্তে বিক্রয় কচ্চেন? বুঝেছি, তুমি ঐশ্বর্য্যশালী চার্লসকে ভালবাস্তে, দরিদ্র দুর্ভাগ্য চার্লসকে নয়—” এই বলিয়াই চার্লস দ্রুতপদে চলিয়া গেল। ফ্যানী কাতরস্বরে ডাকিল “মিষ্টার ফষ্টার! যেওনা শুনে যাও।” চার্লস ফিরিলনা, দেখিতে দেখিতে রজনীর অভেদ্য অন্ধকারের মধ্যে অদৃশ্য হইয়া গেল। আর ফ্যানী সেই জনশূন্য উদ্যানের মধ্যে সেই নিস্তব্ধ গভীর রাত্রে ঝিল্লীমন্দ্রিত জোনাকীখচিত বৃক্ষতলে দাঁড়াইয়া কাঁদিতে