পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ
১২৯

তাতারীর অসাধ্য কার্য্য নাই। তাতারী নিকটে আসিয়া বলিল, “জাগিয়াছিস? বড় জোর চোট লাগিয়াছিল, না? একটু সরাব পি।” রমণী বস্ত্রমধ্য হইতে চর্ম্মনির্ম্মিত আধার বাহির করিল, তাহার মুখে সুরার তীব্র গন্ধ, স্নানাভাবজনিত অঙ্গের দুর্গন্ধের সহিত মিশিয়া, তাহাকে অভিভূত করিয়া তুলিল; ময়ূখ মুখ ফিরাইয়া লইলেন। তাতারী হাসিয়া উঠিল এবং ময়ূখের মুখময় সুরা ছড়াইয়া দিল। তিনি তখন দুর্ব্বল, ধীরে ধীরে শয্যা ত্যাগ করিয়া উঠিয়া দাঁড়াইলেন। তখন রমণী আসিয়া তাঁহাকে আলিঙ্গন করিল, ময়ূখ মুক্ত হইবার চেষ্টা করিলেন কিন্তু পারিলেন না। পশ্চাতে পদশব্দ শুনিয়া তাতারী তাঁহাকে পরিত্যাগ করিল। ময়ূখ ফিরিয়া দেখিলেন যে শয্যাপার্শ্বে দুইটি সুন্দরী যুবতী দাঁড়াইয়া আছে। প্রথমা বিদেশিনী, তাহার বর্ণ গোলাপের ন্যায় হইলেও উগ্র, কেশ পিঙ্গল বর্ণ এবং চক্ষুর মণি পীতবর্ণ; দ্বিতীয়া, স্নিগ্ধ পদ্মরাগবর্ণা, তাহার কুঞ্চিত আর্দ্র কৃষ্ণ কেশরাশি ভূমিতে লুটাইয়া পড়িয়াছে এবং তাহার নীল নয়নদ্বয়ে চঞ্চল ভ্রমরবৎ কৃষ্ণ তারকা দুইটি সর্ব্বদাই যেন নৃত্য করিতেছে। ময়ূখ বিস্মিত হইয় তাঁহাদিগের দিকে চাহিয়া রহিলেন। তাঁহার মনে হইল দ্বিতীয়া তাহার পরিচিত। জীবনের কোন এক তমসাচ্ছন্নযুগে বিস্মৃতির অন্ধকার মধ্যে এই সুন্দর মুখখানি উজ্জ্বল আলোকের ন্যায় ফুটিয়া উঠিয়াছিল। সে কবে? সে কোথায়?

 সহসা বীণানিন্দিত কণ্ঠে উচ্চারিত হইল, “শাহ্‌জাদী, উনি